যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলপন্থীদের বর্বর হামলা

বিক্ষোভ
  © সংগৃহীত

ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভের জেরে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযান ও অর্ধশত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের রেশ কাটতে না কাটতেই দেশটির আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভকারী দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী এবং ইসরায়েলপন্থি একটি দলের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মেরি ওসাকো এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ সহিংসতা’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। সংঘর্ষের পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ডাকা হয়েছে। 

সিএনএস ও বিবিসি জানায়, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশি অভিযানের কয়েক ঘণ্টা পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখোশ পরা ইসরাইল সমর্থকরা ফিলিস্তিনপন্থিদের লাঠিপেটা করে।

রয়টার্স জানিয়েছে, একটি মার্কিন গণমাধ্যমের লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতের এ সংঘর্ষের সময় ইউসিএলএ ক্যাম্পাসের মধ্যে ইসরাইলের সমর্থকরা ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্প ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছিল। এ সময় ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করতে বাকি শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী ব্যারিকেড হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ প্ল্যাকার্ড বা ছাতা ধরে রেখেছে।

আহত বেশ কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দিতে দেখা গেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ বিভাগ, ব্যাপক সহিংসার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে তারা ক্যাম্পাসে গেছে। কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি সমাবেশকে বেআইনি ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঠিক কোন ঘটনায়, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

ভিডিওতে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর কালো মুখোষ পরে ইসরায়েলপন্থীরা হামলা চালাচ্ছে। এক আন্দোলকারী বলেন, আমাদের ওপর ইসরায়েলপন্থী সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। শত শত পুলিশ বাইরে থাকলেও তারা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। তবে গেটে অল্প কয়েকজন পুলিশ ছিলো, তারা সংখ্যা কম এই অযুহাতে ভেতরে প্রবেশ করেননি। 

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনপন্থী আক্রমণকারীদের ওপর পুলিশের অভিযান ও লাঠিপেটাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এটা অসাধারণ দৃশ্য। দির্ঘদিন এমন দৃশ্য দেখা যায়নি।

এর আগে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিল্টন হল থেকে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয় পুলিশ। ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা ভবনটি দখলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে হ্যামিল্টন হলে পুলিশ ঢুকে পড়ে। পুলিশকে ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের অনেকে দরজার বাইরে মানবঢাল তৈরি করেছিলেন।

তিন ঘন্টার অভিযানে হ্যামিল্টন হল থেকে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ। সেখান থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সপ্তাহ দুয়েক আগে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে এ বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাসগুলোয় তাঁবু খাটিয়ে এখনো চলছে বিক্ষোভ।


মন্তব্য