কালাইয়ে ক্ষেতের

মরিচ গাছ উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা, ক্ষতি দুই লক্ষাধিক টাকার

কালাই
  © টিবিএম

জয়পুরহাটের কালাইয়ে রাতের আঁধারে এক কৃষকের ৪৫ শতক মরিচ ক্ষেতের সমস্ত গাছ উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গত বুধবার গভীর রাতে উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের নুনুজ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।ভুক্তভোগী কৃষক উদয়পুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দীনের ছেলে আলী আনছার। 

এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে ভুক্তভোগী কৃষক আলী আনছার (পান্না) কালাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, ভুক্তভোগী কৃষক আলী আনছার জমি লিজ (পত্তন) নিয়ে ৪৫ শতক জমিতে মরিচ লাগিয়েছে। মরিচের গাছগুলোর চেহারা ছিল খুব সুন্দর। কেবল ঝাঁক ধরে গাছগুলোতে মরিচ আসা শুরু করেছে। এতে বর্তমান বাজার অনুযায়ী তার মরিচের ক্ষেত থেকে ২ লক্ষাধিক টাকার মরিচ বিক্রি হতো। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সকালে শুনি গতরাতে তাঁর মরিচের গাছ উপড়ে ফেলেছে। জমিতে এসে দেখি সমস্ত গাছ কে বা কারা উপড়ে ফেলেছে। এর সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে ক্ষতিপূরণসহ কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। যাতে করে এতো বড় জঘন্য অপরাধ বা ক্ষতি করার সাহস আর কেউ না পায়। 

ভুক্তভোগী কৃষক আলী আনছার জানান, পাশের গ্রামের  রুহুল আমিন নামের একজনের কাছ থেকে তিনি সবজি চাষ করতে সাড়ে ৪৫ শতাংশ জমি লিজ নেন। এজন্য তাকে বছরে ৩০ হাজার দিতে হয়। সেই জমিতে ২ মাস আগে মরিচ চাষ শুরু করেন। এতে তার ব্যয় হয় প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা। কঠিন এই তাপদাহের মধ্যে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মরিচের ক্ষেতের পরিচর্যা করেন তিনি। এর ফলে গাছগুলোতে থোকায় থোকায় মরিচও ধরেছিল। আর ১ সপ্তাহ পর তার মরিচের চালান ওঠা শুরু হতো। খুব আশা ছিল অনেক লাভ করবে। কিন্তু তা আর হতে দিলো না। 

তিনি আরো জানান, প্রতিদিনের মতো গতকাল বিকেলে মরিচ ক্ষেতে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরেন তিনি। কিন্তু আজ ভোরে মরিচ ক্ষেত পরিচর্যার জন্য গিয়ে দেখেন সমস্ত মরিচগাছ উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এইসব আবাদ দিয়ে সংসার চলে তার। আমি এখন কি করে খাব, কিভাবে সংসার চালাবো, জমি পত্তনের টাকা দিব কিভাবে? এসব বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। 

এ বিষয়ে কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, ভুক্তভোগী কৃষক তার ৪৫ শতক জমি থেকে বর্তমান বাজারে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারতো। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষককে থানায় গিয়ে তিনি অভিযোগ করতে বলেন। সেইসাথে দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। 

কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন, ভুক্তভোগী কৃষক আলী আনছারের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।