ইসরাইলের ৬ স্থাপনায় হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা, বহু হতাহত

ইসরায়েল
  © সংগৃহীত

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩৭ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। হামাসকে ধ্বংসের নামে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি লেবাননের হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া এই দেশটি। তবে পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ। ইসরাইলের একটি নৌঘাঁটিসহ ৬টি স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। শুক্রবার ‘নিখুঁতভাবে’ আঘাত হানতে সক্ষম এক ঝাঁক আত্মঘাতী ‘কামিকাজে’ ড্রোন দিয়ে ওই হামলা চালানো হয়।

এতে ইসরাইলের ওই নৌঘাঁটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

এদিন এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, ড্রোনগুলো ইসরাইলের ‘রাস আন-নাকুরা’ ঘাঁটিতে অবস্থিত এমন কয়েকটি ভবনে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। যেসব ভবন ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা ও সাধারণ সেনারা ব্যবহার করে থাকেন। হামলায় নৌঘাঁটিটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং নিশ্চিতভাবে বহু সেনা হতাহত হয়েছে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। যাতে একজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হন। এর প্রতিবাদেই শুক্রবার হামলা চালায় হিজবুল্লাহ।

বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতে এবং দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে বৃহস্পতিবারের ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই নৌঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে।  

এদিকে হিজবুল্লাহর হামলার বিষয়ে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে শুক্রবার রাতে ইসরাইলের রিজার্ভ জেনারেল ইতজাক ব্রিক বলেছেন, হিজবুল্লাহর ওপর যেকোনো হামলা এই অঞ্চলে ব্যাপক যুদ্ধের জন্ম দেবে।

আরেক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলের শেবা কৃষিখামারের রুওয়াইসাত আল-কার্ন ও জিবদিন ঘাঁটি এবং কুফার শুবা পাহাড়ের রামথা ও আল-সামাকা ঘাঁটি লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এতে ইসরাইলের বহু ক্ষতি হয়েছে।

গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সমর্থনে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার তালেব সামি আব্দাল্লাহকে হত্যা করার পর ইসরাইলবিরোধী হামলা জোরদার করেছে লেবানন ভিত্তিক সংগঠনটি।

এর জেরে শীর্ষ পর্যায়ের ইহুদি সেনা কর্মকর্তারা সম্প্রতি লেবাননে ‘ব্যাপক-মাত্রায়’ হামলা চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেন। গত মঙ্গলবার ইসরাইলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা লেবাননে অভিযান চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছে।

একই দিন হিজবুল্লাহ গোয়েন্দা ড্রোন পাঠিয়ে ইসরাইলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করে। এতে রীতিমতো ‘হকচকিত’ হয়ে যায় তেল আবিব।

এরপর বুধবার হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, লেবাননে ব্যাপক মাত্রায় আগ্রাসন চালালে ইসরাইলের এক ইঞ্চি ভূমিও হিজবুল্লাহর রকেট হামলা থেকে বাঁচতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি ইসরাইলকে আগ্রাসন চালানোর কাজে সহযোগিতা করলে সাইপ্রাসেও হামলা চালানোর হুমকি দেন। 

সূত্র: ইরনা


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ