মাটির কলসিতে রাখা পানি খান এই গরমে

লাইফ স্টাইল
  © ফাইল ছবি

প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে এক সময় তীব্র গরমে মাটির কলসিতে পানি রেখে খাওয়ার চল ছিল। তবে সময়ের পরিক্রমায় ফ্রিজের বদৌলতে শহরে মাটির কলসির ব্যবহার কমলেও গ্রাম অঞ্চলে অনেকেরই এখনও এটি ব্যবহার করতে দেখা যায়।

প্রাকৃতিকভাবে শীতল করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে মাটির যার ফলে অনেক গরমেও মাটির কলসিতে পানি ঠান্ডা থাকে। মাটির কলসির গায়ে লাখ লাখ ছোট ছোট ছিদ্র থাকে যা খালি চোখে দেখা যায় না। এই ছিদ্রগুলো দিয়ে পানি চুঁইয়ে কলসির বাইরে চলে আসে এবং বাষ্প হয়ে আকাশের দিকে উড়ে যেতে চায়। কিন্তু উড়তে গেলে তাপের দরকার হয়। বাষ্প হওয়ার জন্য পানির যে তাপের দরকার, তা মাটির কলসির ভেতরের পানি থেকে আসে। ফলে কলসির ভেতরের পানির তাপ কমে যায় এবং সে কারণে পানি ঠাণ্ডা হতে থাকে। 

মাটির কলসির পানি খাওয়ার উপকারিতা

গরমকালে মাটির কলসি, জগ ও গ্লাস ব্যবহার করলে পানি যেমন ঠান্ডা থাকে; তেমনি উপকৃত হয় শরীরও।

১. ক্ষারীয় ভারসাম্য

মাটির পাত্রের পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ মেশে। এই পানি খেলে পেটের বিভিন্ন প্রকার অ্যাসিড কিছুটা প্রশমিত হয়। পাশাপাশি অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজায় থাকে ও পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে শরীরের।

২. পানির স্বাদ এবং সতেজতা

মাটিতে থাকা বিভিন্ন খনিজের কারণে পানির স্বাদ বেড়ে যায় অনেকটাই। মাটির পাত্রের ছিদ্রযুক্ত পৃষ্ঠ বাতাস চলাচলের জন্য উপযুক্ত। ফলে পানির সতেজতা বজায় থাকে।

৩. হজমশক্তি উন্নত

মাটির পাত্রে সঞ্চিত পানি হজমে সহায়তা করে এবং পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। মাটির পাত্রের পানির ক্ষারীয় প্রকৃতি পাকস্থলীর অম্লতা কমায় ও বদহজম এবং বুকজ্বালার উপসর্গগুলো উপশম করে।

৪. পুষ্টির সংরক্ষণ

প্লাস্টিক বা ধাতব পাত্রে পানি রাখলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বা দূষিত পদার্থ মিশে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে মাটির পাত্রে এই ভয় নেই। পানির প্রাকৃতিক গঠন অক্ষত রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং খনিজ সংরক্ষণ করে মাটির পাত্র।

৫. পরিবেশবান্ধব সমাধান

পানি সংরক্ষণের জন্য মাটির পাত্র বেছে নেওয়া প্লাস্টিকের বোতল বা পাত্রের পরিবেশবান্ধব বিকল্প। মাটির পাত্রগুলো প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি করা হয় পরিবেশগতভাবে টেকসই। প্লাস্টিকের উপর নির্ভরতা হ্রাস করে এটি।

 

এবার আসি নতুন মাটির কলসি ব্যবহারের আগে কিভাবে পরিষ্কার করবেন! 

  • প্রথমে মাটির কলসি টি পানির মধ্যে ঘন্টা খানেক ডুবিয়ে রাখুন
  • এরপর সামান্য লবণ আর খাবার সোডা দিয়ে একটি স্ক্রাবার দিয়ে আলত করে ঘোষে ধুয়ে নিন
  • পরিষ্কার করার পর কলসিটি রোদে শুকাতে দিন। সূর্যের আলোতে প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি কোনও গন্ধ বা ব্যাকটেরিয়া থাকলে সেটাও দূর করতে সাহায্য করে।

মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ