ঢাকায় বৃষ্টি থাকতে পারে  আরো যে কয়দিন   

মৌসুমি
  © ফাইল ছবি

আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই বৃষ্টি ঝরছে। আরও অন্তত চার দিন পরিস্থিতি একই রকম থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বাভাস বলছে, আগামী ৬ জুলাইয়ের পরে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে শুরু করবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান বলেন, 'মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই বৃষ্টি হচ্ছে, তবে ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে তুলনামূলক বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আগামী কয়েক দিনে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় এ রকম টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।'

এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় দেশের আটটি জেলায় মাঝারী ধরনের ভারী (২৪ ঘণ্টায় ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার।

এর আগে সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া, নয়টি জেলায় অতি ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুরে ১০০ মিলিমিটার, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১১২, নেত্রকোণায় ২১৫, চট্টগ্রামে ১০৭, রাঙ্গামাটিতে ১০৫, নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে ১০৯, ফেনীতে ২০৮, বান্দরবানে ১১৫ ও খাগড়াছড়িতে ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বাভাস অনুসারে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বায়ুচাপের তারতম্য। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে আজও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

দুর্ঘটনা এড়াতে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

ইতোমধ্যে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জে ২৭, কুশিয়ারার অমলশিদ পয়েন্টে ৭১, শেওলায় ২২, শেরপুর-সিলেটে সাত, মারকুলি পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার এবং মৌলভীবাজারে মনু নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার, কলমাকান্দায় সোমেশ্বরী ৫৭ ও নাকুয়াগাও পয়েন্টে ভুগাই নদীর পানি বিপৎসীমার দুই উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও এর পাশে উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের কিছু পয়েন্টে পানির সমতল স্বল্প মেয়াদের জন্য বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এই সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহরী নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে। বৃহস্পতিবারে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।

সরদার উদয় রায়হান  বলেন, 'উজানে ভারী বর্ষণের কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর কিছু পয়েন্টে আগামী ৫-৬ তারিখে পানির সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা আশা করছি, এখানে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ১০ জুলাইয়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।'


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ