দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস আজ
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২২, ১১:০০ AM , আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২২, ১১:০০ AM
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস আজ (২৬ আগস্ট)। ২০০৬ সালের এ দিনে ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে তৎকালীন বিডিআর-পুলিশের গুলিতে তিন যুবক নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক। প্রতিবছর দিনটিকে ‘ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
১৯৯৪ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সংস্থা বিএইচপির সঙ্গে চুক্তি হয় সরকারের। পরে এশিয়া এনার্জির সঙ্গে সরকার ৩০ বছর মেয়াদি একটি অসম চুক্তি করে। প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী, উত্তোলিত কয়লার মাত্র ৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ, ৯৪ শতাংশ পাবে এশিয়া এনার্জি, যার ৮০ শতাংশ এশিয়া এনার্জি রপ্তানি করবে।
তবে কয়লাখনি হলে পুরো ফুলবাড়ী শহরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পানির স্তর নিচে নেমে গেলে কৃষিতে এর প্রভাব পড়বে, হুমকির মুখে পড়বে গোটা পরিবেশ। ফলে বিশাল একটি জনবসতি স্থানান্তরিত হবে। উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে রূপ নেবে- পরিবেশবাদীদের এমন হুঁশিয়ারিতে গঠিত হয় ‘ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটি’। শুরু হয় আন্দোলন।
পরবর্তীতে জাতীয় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির নেতারা এ আন্দোলনে যোগ দেন। ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ঢাকা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদসহ জাতীয় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির নেতারা ফুলবাড়ী শহরের নিমতলা এলাকায় সভায় যোগ দেন।
সমাবেশের পর মিছিল নিয়ে উপজেলার ঢাকা মোড় থেকে এশিয়া এনার্জির কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে তৎকালীন বিডিআর গুলি চালায়। এতে আমিন, সালেকীন ও তরিকুল নামের তিন যুবক নিহত হন। দুই শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হন।
এরপর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে ফুলবাড়ী। ৩০ আগস্ট তৎকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আন্দোলনের নেতারা। আলোচনায় আন্দোলনকারীদের ছয়-দফা প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ছিল- এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে না। তবে ১৬ বছরেও সব দাবি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে হতাহতদের পরিবারকে কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও আর কোনো খবর নেওয়া হয়নি।
দিনটিকে তেল-গ্যাস জাতীয় কমিটি ‘সম্পদ রক্ষা দিবস’ ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে পালন করছে।