ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম

“আবরারের লাশের ওপর ভর করে মৌলবাদী গোষ্ঠী বুয়েটে বীজ বপন করছেন”

বুয়েট
  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আবরারের লাশের ওপর ভর করে আজকে আপনারা মৌলবাদী গোষ্ঠীর বীজ বপন করার চেষ্টা করছেন। আবরার আপনাদের কাছে ভাই নয়। আবরারের মৃত্যু এই জঙ্গিবাদী শক্তির হৃদয়ে কোন বেদনার উদ্ভব করেনি। আবরার স্রেফ একটি পলিটিক্যাল ক্যাপিটাল। বুয়েট কি পাকিস্তান যে সেখানে ভিসা-পাসপোর্ট নিয়ে প্রবেশ করতে হবে?

সম্প্রতি বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বুয়েট প্রশাসন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বিকে হল থেকে বহিষ্কার করে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে আজ রবিবার (৩১ মার্চ) ছাত্রলীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাদ্দাম এসব কথা বলেন।

বুয়েট প্রশাসনের উদ্দেশে সাদ্দাম বলেন, বুয়েট কি পাকিস্তান যে ভিসা, পাসপোর্ট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে? আমি অনেকবার বুয়েটে গিয়েছি। অনেকেই এটাকে অনুপ্রবেশ বলার চেষ্টা করছে। বুয়েটের ছোট ভাই, বন্ধুদের সাথে কথা বলেছি। সেদিনও আমার দাঁড়ানোর কথা ছিলো না। যাওয়ার সময় আমার পরিচিত কয়েকজনের সাথে কথা বলার জন্য শহীদ মিনারের সামনে দাঁড়াই। বৃষ্টি আসার কারণে ক্যাফেটেরিয়ার দিকে যাত্রা করেছি। এটির জন্য কি পারমিশন নিতে হবে? শুধু বুয়েট কেন পৃথিবীর যেকোনো প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। 

আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ছাত্র রাজনীতির কিছু নেগেটিভ দিক রয়েছে। আপনারা বলেন ছাত্র রাজনীতিতে ভাই কালচার রয়েছে, গেস্ট রুম কালচার রয়েছে। আপনারা আসুন, ছাত্র রাজনীতি করুন। আপনারা ছাত্র রাজনীতির স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করুন, কিভাবে ছাত্র রাজনীতি করবে।

সাদ্দাম বলেন, ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে গেছে। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার নাটক এই বাংলাদেশ থেকে বন্ধ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, রাজাকারের ফাঁসি চাই স্লোগান তোলার অপরাধে শহীদ হওয়া বুয়েটের শিক্ষার্থী দ্বীপকে আমরা ভুলে যাইনি। কি অপরাধ ছিল তার। তার কন্ঠে স্লোগান বর্ষিত হতো ক-তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার। বিএনপির ঘষেটি বেগম খালেদা জিয়া রাতের আঁধারে, রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ করে দিলেন। আজ অব্দি আমরা কি সেই সনি হত্যার বিচার হতে দেখেছি? সেই খুনিরা কোথায়, তারা এখন বিদেশে।

তিনি বলেন, একজন আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে যে বিষয়টি উল্লেখ না করলেই নয়, বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে; সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে, রাজনৈতিক অধিকার চর্চার সুযোগ সবার রয়েছে যদি কি না সেটা দেশের বিরুদ্ধে যায়। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির চর্চা করা, জাতির পিতার আদর্শের চর্চা করা; এটি কোন শিক্ষার্থীর অপরাধ হতে পারে না। এই ন্যায্য অধিকার থেকে একজন শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা সংবিধান পরিপন্থী।

ইনানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পী, সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম , ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, বুয়েটের হল থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বি প্রমুখ।


মন্তব্য