ভারতে নিখোঁজ এমপির মেসেজ ঘিরে জট পাকাচ্ছে ‘সন্দেহ’

সংসদ
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার  © ফাইল ছবি

ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। সাতদিন ধরে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহৃত বাংলাদেশি ও ভারতীয় দুটি নম্বর বন্ধ রয়েছে। গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান তিনি। ১৩ মে কলকাতার বরাহনগরের বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ এমপি আনোয়ারুল আজিম।

এদিকে নিখোঁজ এমপি আজিমের মোবাইল থেকে আসা মেসেজ ঘিরে রহস্যের জট আরও বাড়ছে। তার মোবাইল থেকে গত ১৫ মে হোয়াটসঅ্যাপে তিনটি মেসেজ আসে। একই মেসেজ তিনজনকে দেওয়া হয় তার নম্বর থেকে। সংসদ সদস্যদের কলকাতার বন্ধু গোপাল, তার (এমপি আনারের) ব্যক্তিগত গাড়িচালক ও তার ভাগনির হোয়াটসঅ্যাপে একই মেসেজ আসে।

এই মেসেজ নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। কারণ, সংসদ সদস্য এমনভাবে মেসেজ লিখতে পারেন না বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ।

আব্দুর রউফ বলেন, আমি এমপি সাহেবের সঙ্গে বহুদিন ধরে আছি। বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে এমন মেসেজ কখনো লিখতে পারেন না। হয়তো অন্য কেউ তার মোবাইল থেকে এ মেসেজ লিখে দিয়েছে। এছাড়া মোবাইলে কথা না বলে মেসেজ দেওয়ার ঘটনা আরও রহস্য বাড়িয়ে দিয়েছে।

মেসেজের বিষয়টি এমপি আনারের ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. তরিকুল নিশ্চিত করে জানান, তার মোবাইলে এমপি মেসেজ দিয়েছেন।

পরিবারের সন্দেহ এ বার্তা আনারের লেখা নয়। এ বিষয়ে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, এই মেসেজ আমার বাবা লেখেননি। হয়তো অন্য কেউ বাবার মোবাইল থেকে লিখেছেন।

এ অবস্থায় সবার মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।পাশাপাশি হঠাৎ করে একজন সংসদ সদস্যের প্রতিবেশী রাষ্ট্রে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে যা লেখা ছিল-‘আমি এখন বিজি থাকব আমাকে ফোনে পাওয়া যাবে না। আমি দিল্লি নেমে সময় মতো কন্টাক করব’ 'আমি মাত্র দিল্লি নেমেছি, ২ জন ভিআইপি এর সাথে আছি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ফোন দেবার দরকার নাই’ ‘চিন্তা করার দরকার নাই। অনেক ভালো খবর নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ’

আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, আমি বাবার খোঁজে কলকাতায় যাবো। ভিসা এবং কাগজপত্র প্রস্তুত হলেই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হবো।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে ভারতীয় বিশেষ টাস্কফোর্স এসটিএফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, ভারতীয় থানা পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়েও আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এমপিকে উদ্ধার করতে।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, প্রতিনিয়ত ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আনোয়ারুল আজিমের ব্যবহৃত নম্বরটি মাঝে মধ্যে কেউ খুলছেন আবার বন্ধ করছেন। কারা কাজটি করছেন, তিনি কোনো ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন কি না- সবকিছুই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ