হজ নিয়ে লাল তালিকার ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

হজ
  © ফাইল

পবিত্র হজ পালন নিয়ে উচ্চ ঝুঁকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। ৭ জুনের মধ্যে অন্তত ৮০ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করতে না পারলে লাল তালিকাভুক্ত করার হুমকি দিয়েছে সৌদি আরব। এমন তথ্য জানিয়ে ধর্ম সচিবকে চিঠি দিয়েছে জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ অফিস।

সোমবার জেদ্দা হজ অফিসের কাউন্সেল জহিরুল ইসলামের পাঠানো চিঠিতে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারলে যাবতীয় দায় সংশ্লিষ্ট হজ অফিসকে বহন করতে হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এবছর এখন পর্যন্ত ৮৯ হাজারের মতো হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। বাকি রয়েছে আরও ৩৪ হাজার হজযাত্রীর ভিসা। এ হিসেবে বাংলাদেশের ৭৩ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে। এখনও বাকি আছে ২৭ শতাংশ। আর সৌদি আরবের শর্ত পূরণ করতে হলে বুধবারের মধ্যে অন্তত আরও ৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ৬১০ হজযাত্রীর ভিসা নিশ্চিত করতে হবে।

চলতি বছর বাংলাদেশের হজ কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় বিরক্ত। এ কারণে হজের ভরা মৌসুমের মধ্যেই গত রোববার রাতে ধর্ম সচিবকে বদলি করা হয়। দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে হজ ডেস্কের উপসচিব মর্যাদার এক কর্মকর্তাকেও।

এদিকে নিয়োগ দেওয়ার ১৬ ঘণ্টার মধ্যেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছেন নতুন সচিব হামিদ জমাদ্দার। জানা যায়, সোমবার রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসানকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করা হয়। এরপর মঙ্গলবার দুপুরের পরপরই পিএসসি সচিব থেকে বদলি হওয়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব হামিদ জমাদ্দার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সঙ্গে দেখা করে মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছেন। তবে এ সময় বিদায়ী সচিব এনামুল হাসান উপস্থিত ছিলেন না।

দায়িত্বগ্রহণ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে হামিদ জমাদ্দার বলেন, ‘হজ যাত্রীরা আল্লাহর ঘরের মেহমান। তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সব সময় খোঁজ রাখেন। আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবো। এই ক্ষেত্রে গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা চাই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এর আগেও হজ সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করেছি। আশা করছি, বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমধান করতে পারবো।’

কড়া সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের: জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ হজ অফিস থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে এ বিষয়ে সৌদি সরকারের বার্তাটিও পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘কিছু কিছু দেশের হজ অফিস লাল তালিকাভুক্ত হয়েছে। ফলে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও কার্যক্রম সম্পাদনে বেশ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এর যাবতীয় দায়ভার সেসব হজ অফিসের ওপরই বর্তাবে।’ নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘৭ জুনের মধ্যে ভিসা ইস্যুর শতকরা ৮০ ভাগ কাজ সম্পাদন করা চাই। এর ব্যত্যয় ঘটলে সৌদি হজ মন্ত্রণালয় যে কোনো ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবে।’ অবশ্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে কোন কোন দেশ লাল তালিকায় পড়েছে তা জানানো হয়নি।

উল্লেখ্য, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রায় সব হজ যাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো পিছিয়ে আছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুন ৯০টি হজ এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর আগে আরও ৮টি এজেন্সিকে অব্যবস্থাপনার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। 

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত ২১ মে থেকে শুরু হয়েছে হজ ফ্লাইট। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অর্ধেক হজ যাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ