বাংলাদেশের ওপর ‘চরম বিরক্ত’ সৌদি সরকার, বাড়তে পারে সময়
- ওসমান গনি
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩১ AM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩১ AM

চলতি বছরের হজ নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, প্রায় ৮০ হাজার হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এখনো ২৭ হাজারের বেশি নিবন্ধন বাকি। কাঙ্ক্ষিত হজযাত্রীর নিবন্ধন সম্পন্ন না হওয়ায় সৌদি কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে বাংলাদেশের ওপর সৌদি সরকার ‘চরম বিরক্ত’ বলে জানা গেছে।
নিবন্ধনের শেষ দিন গতকাল হজ পোর্টাল ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ১৬৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৩ হাজার হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। যদিও মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, সব মিলিয়ে ৮০ হাজারের মতো নিবন্ধন হয়েছে। নিবন্ধনকারীর সঠিক সংখ্যা ওয়েবসাইটে আপলোড হয়নি।
হজ গমনেচ্ছুদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময় আরও দু-এক দিন বাড়ানো হলে তারা নিবন্ধন করে হজে যাবেন। টাকা জোগাড় না হওয়ায় তারা সময়মতো নিবন্ধন করতে পারেননি। এমন অবস্থায় হজ এজেন্সিগুলোও আরও দু-এক দিন সময় বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আগামী রবি ও সোমবার এই দুদিন বাড়তে পারে। তবে তা এখনো নিশ্চিত করছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বয়ানে চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব
এ প্রসঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, সময় বাড়ানোর খুব একটা সুযোগ নেই। কারণ, সৌদিকে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সবকিছু জানাতে হবে। হাতে সময় নেই। তবুও আমরা আজ শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে বসব। সবার মতামতের ভিত্তিতে দেখি দু-এক দিন বাড়াতে পারি কি না।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সৌদি কর্তৃপক্ষকে এখনো হজযাত্রীদের তথ্য-উপাত্ত জানানো হয়নি। ফলে হাজিদের জন্য তাঁবু ঠিক হয়নি। এ নিয়ে বাংলাদেশের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করে যাচ্ছে সৌদি।
হজ এজেন্সির মালিকরা মনে করছেন, বর্তমানে দেশের মানুষ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী দাম। পণ্যের মূল্যেই মানুষ দিশেহারা। এ ছাড়া শিক্ষা-চিকিৎসাসহ প্রতিটি খাতে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। মানুষের হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। তার ওপর হজ প্যাকেজের দামও বেশি। ফলে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মধ্যবিত্তের মধ্যে হজের প্রতি আগ্রহ কম দেখা যাচ্ছে। অনেকেই হজের পরিবর্তে দেড় লাখ টাকা খরচ করে ওমরাহ করার দিকে ঝুঁকছেন।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের হজ নিবন্ধন শুরু হয়ে চলে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ হজযাত্রী নিবন্ধন না করায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এরপর আরেক দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এরপর তৃতীয় দফায় নিবন্ধনের সময় ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়। সেই সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ বছরও হজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ১ লাখ ১৭ হাজার জনের হজ পালনের কথা বলা হয়েছে। তবে উভয় ব্যবস্থাপনায় ৮০ হাজারের মতো নিবন্ধন হয়েছে। এখনো প্রায় ৪৭ হাজার জনের কোটা পূরণ হয়নি। সর্বশেষ এ সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখার অপেক্ষা করতে হবে।