পেমেন্ট ক্যাম্পেইনের আয় বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের দেবে নগদ

বঙ্গবাজার
  © লোগো

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নগদ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চলমান মেগা পেমেন্ট ক্যাম্পেইনের আয় থেকে আসা পুরো অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।

একই সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা ১০০ ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৫০ লাখ টাকা অনুদান দেবেন।

এ বিষয়ে নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সবার মতো আমিও মর্মাহত। আমার স্কুল জীবন, কলেজ জীবনের অনেক স্মৃতি আছে এ বঙ্গবাজারে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কষ্ট কিছুটা হলেও বুঝি।

তিনি বলেন, আমি যখন নগদ শুরু করি, তার ঠিক এক বছরের মধ্যেই কোভিড শুরু হয়ে যায়। আমি ততদিনে আমার সব ইনভেস্ট করে ফেলেছিলাম এখানে, আমার সবকিছু। বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়েছি, বিশাল টেকনোলজি সেটআপ করেছি। ঠিক সেসময় লকডাউন আসে। আমি তখন প্রতিরাতে ভাবতাম এ মানুষগুলোকে কীভাবে বেতন দেবো, কীভাবে এগিয়ে যাবো। আজকে দেখেন, সেই নগদ সাড়ে সাত কোটি গ্রাহকের পরিবার। এটা সম্ভব হতো না, যদি আমি সেদিন ভেঙে পড়তাম।

ঈদ উপলক্ষে নগদের মেগা ক্যাম্পেইন চলমান। বিএমডব্লিউ, সেডান গাড়ি থেকে শুরু করে অনেক পুরস্কারের এ ক্যাম্পেইনে চলছে দারুণ লেনদেন।

তানভীর এ মিশুক জানান, এ ক্যাম্পেইন থেকে পাওয়া আয়ের টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দেওয়া হবে। বুধবার (৫ এপ্রিল) রাত পর্যন্ত ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫০ টাকা আয় হয়েছে এ ক্যাম্পেইন থেকে।

তিনি বলেন, কোনো কথা দিয়ে তাদের এ ট্রমা কমানো সম্ভব না। তবে আমরা যদি যে যার জায়গা থেকে কিছুটা হাত বাড়িয়ে দেই, তারা হয়তো বিশ্বাস পাবেন যে, তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। এ লক্ষ্য থেকে আমরা রাতেই বোর্ডের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিই যে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যসায়ীদের পাশে থাকব আমরা। নগদের চলমান ক্যাম্পেইনে গ্রাহকের কোনো বাড়তি খরচ না হলেও আমরা মার্চেন্ট থেকে কিছু আয় পাই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ ক্যাম্পেইন থেকে যত টাকা আয় হবে, পুরোটা আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেবো।

এদিকে প্রতিমন্ত্রী পলক নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলাপে বলেন, আপনার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার পরিকল্পনা করেছি। পাশাপাশি যারা সমাজে সামর্থ্যবান মানুষ আছেন, তাদের উৎসাহ দেওয়াও আমাদের এ উদ্যোগের কারণ। তারাও যেন এভাবে এগিয়ে আসতে পারেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করবো আমার পরিচিত সামর্থ্যবান যারা আছেন, তাদেরও উৎসাহিত করার জন্য।

প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপে তানভীর এ মিশুক বলেন, পাঁচ হাজার ব্যবসায়ীর এক হাজার কোটি টাকার হয়তো ক্ষতি হয়েছে। এ টাকাটা হয়তো সেভাবে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এটা প্রমাণ করে যে, সরকার ও প্রাইভেট সেক্টর মিলে হাত মেলালে যে কোনো সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।

তানভীর এ মিশুক সব ব্যবসায়ী ও নগদ ব্যবহারকারীদের কাছে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে যারা আছেন, সবাইকে আমি অনুরোধ করবো নিজের পকেট থেকে হোক, সিএসআর ফান্ড থেকে হোক, আর বিজ্ঞাপনের খরচ কমিয়ে হোক, এ মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ান। আজকে এ ব্যবসায়ীরা যে বিপদে পড়েছেন, কাল আমরাও পড়তে পারি। আমার সাড়ে সাত কোটি নগদ পরিবারের প্রতি আমার দাবি, যে যেভাবে পারেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াবেন। নগদ অ্যাপ থেকে ডোনেশন ট্যাবে গিয়ে বিদ্যানন্দ, মাস্তুল ফাউন্ডেশন আছে, এরকম যেকোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবেন।


মন্তব্য