ফেনী জামেয়া রশীদিয়া মাদ্রাসা

বিনা পারিশ্রমিকে ৮৫০ মসজিদে তারাবি পড়ান ১৭০০ হাফেজ শিক্ষার্থী

ফেনী
  © সংগৃহীত

ফেনী জামেয়া রশীদিয়া মাদ্রাসার এক হাজার ৭০০ হাফেজ এবারের পবিত্র রমজানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আট শতাধিক মসজিদে তারাবি নামাজ পড়াচ্ছেন। এ সব হাফেজ তারাবি পড়ানো বাবদ কোনো হাদিয়া বা সম্মানী নিচ্ছেন না। প্রতিবছরই এ উদ্যোগে নেয়া হয়ে থাকে এ মাদ্রাসা থেকে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের শিক্ষার্থীদের বিনা পারিশ্রমিকে সরবরাহ করে আসছেন।

গত শতাব্দীর শেষ দিকে ফেনীর জেলা সদরে কালিদাস পাহালিয়া নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জামেয়া রশীদিয়া’ নামে বহুমুখী এই ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্রটি। ১৯৯৪ সালে মাদরাসাটির সূচনা হয় একটি জীর্ণ মসজিদে অল্প কয়েকজন ছাত্র নিয়ে কিন্তু মাত্র দুই যুগের ব্যবধানে এটি বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহত্তম ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাদরাসাটি সাত একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত।

 মাদ্রাসার ভেতরে প্রবেশের পর শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল দলবদ্ধ পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মনোরম দৃশ্য চোখের প্রশান্তি এনে দিবে যে কাউকে। কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে শুদ্ধভাবে পবিত্র কোরআনের ত্রিশ পারার শতশত হাফেজদের প্রস্তুত রাখেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আর রমজান মাস আসলেই এসকল হাফেজদের পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মসজিদে খতমে তারাবির নামাজ পড়ানোর জন্য।
 
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ফেনীর ও আশ পাশের জেলার সাড়ে ৮ শতাধিক মসজিদে কোনো রকম বেতন-ভাতা ছাড়া বিনামূল্যে খতম তারাবির নামাজ পড়াচ্ছেন ফেনীর জামেয়া রশীদিয়া মাদ্রাসার ১৭০০ হাফেজ শিক্ষার্থী। কেউ অর্থের বিনিময়ে খতম তারাবির নামাজ পড়ালে তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়।
 
নামাজে উৎসাহ দেয়ার জন্য বিনা পারিশ্রমিকে এ সেবা দেয়া হয় বলে জানান প্রতিষ্ঠান প্রধান ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

অধ্যক্ষ জানান, আমাদের ছাত্রদের হাফেজ সম্পন্ন করিয়ে রমজানে বিভিন্ন মসজিদে তারাবি নামাজ পড়াতে পাঠাই। এটা অনেক বছর আগ থেকে করে আসছি। আমাদের ছাত্ররা এতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তারা কোনো ধরনের লোভ-লালসার মধ্যে নেই। এতে তাদের কোরআন চর্চাও মজবুত হয়, সোয়াবের পাল্লাও ভারী হয়।

 মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে মোট ছাত্র সংখ্যা ৬ হাজার ১০ জনের মধ্যে আবাসিকেই রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার জন। এছাড়াও ১৬২ জন শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে আরও ৫০ জন।

পরিবেশ সংরক্ষণে জামেয়া রশীদিয়া দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আদর্শ। ফলদ ও বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ২০০৯ সালের জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে এবং পুরস্কৃত হয়। মাদ্রাসার ১৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সদস্য রয়েছে। যারা মাদ্রাসার উন্নতি-অগ্রগতির জন্য নিয়মিত দান-অনুদান করেন।

মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ স্বপ্ন দেখে, একদিন জামেয়া রশীদিয়া দেশের অন্যতম ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্ররূপে সর্ব মহলে প্রশংসিত হবে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ