পাশের যাত্রীর ‘অবাধ্য কনুই’ চিহ্নিত করবে স্মার্ট পোশাক! বাসে-ট্রেনে যৌন হেনস্থা রুখবে বিইউবিটির স্মার্ট পোশাক!

বিইউবিটি
বিইউবিটির তৈরি স্মার্ট পোশাক ও এর আবিষ্কারকের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকবৃন্দ  © সংগৃৃহীত

বাংলাদেশে গণপরিবহনে বাড়ছে যৌন হয়রানির ঘটনা। এই হয়রানির শিকার যাঁরা হচ্ছেন তাঁদের বেশিরভাগই কিশোরী এবং পড়ুয়া। এই সব যৌন হয়রানির মধ্যে রয়েছে গণপরিবহনে ওঠা-নামার সময় চালকের সহকারীর অযাচিত স্পর্শ, বাসে জায়গা থাকার পরও যাত্রীদের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, বাজেভাবে স্পর্শ করা, ধাক্কা দেওয়া, বাজে মন্তব্য করা ইত্যাদি। হয়রানির শিকার হলেও বেশিরভাগ মহিলাই ঝামেলা এড়াতে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন না।

তবে এবার এই ধরণের হয়রানির হাত থেকে তাঁদের বাঁচাতে একটি বিশেষ ধরনের পোশাক তৈরি করা হয়েছে। গণপরিবহনে মহিলাদের যৌন হয়রানি বা অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ চিহ্নিত করতে স্মার্ট পোশাক তৈরি করেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) এক শিক্ষক। কম্পিউটারবিজ্ঞান ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম তৈরি করেছে ওই পোশাক।

বিইউবিটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মহিলাদের, নারীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ‘সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ডিটেকশন উইথ স্মার্ট ড্রেস’, অর্থাৎ ‘যৌন হয়রানি চিহ্নিতকরণ স্মার্ট পোশাক’ তৈরি করা হয়েছে।

তাঁদের দাবি, এই পোশাক মানুষের স্পর্শের তারতম্য নির্ণয় করে যৌন হয়রানিমূলক স্পর্শ চিহ্নিত করবে। হয়রানির শিকার ব্যক্তি ও ঘটনাস্থল সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসন ও হয়রানির শিকার মহিলার আত্মীয়দের স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানিয়ে দেবে ওই পোশাক। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও পোশাকটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। 

বিইউবিটি একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মহম্মদ ফৈয়াজ খানের তত্ত্বাবধানে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপ তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সহ–উপাচার্য মহম্মদ আলী নূর এবং সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফুর রহমান।

প্রসঙ্গত, গত বছরেই গণ পরিহবনে যৌন হয়রানি নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল আঁচল ফাউন্ডেশন। তাদের সমীক্ষায় উঠে আসে এক উদ্বেগজনক চিত্র। তাতে দেখা যায়, ঢাকার গণপরিবহনে যাতায়াতকারী মহিলাদের প্রায় অর্ধেককেই হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৬ শতাংশ মহিলাকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। তারা জানিয়েছিল আজিমপুর, মিরপুর, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, বারিধারাসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং কর্মজীবী মহিলা ও কিছু সংখ্যক গৃহবধূর ওপর সমীক্ষা চালানো হয়।

তাতে ১৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৮০৫ মহিলা অংশ নেন। এরমধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ শতাংশ। তাদের সহযাত্রীরাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌননিপীড়নকারী। তাদের অধিকাংশেরই বয়স ৪০ বছরের বেশি। বেশিরভাগ মহিলাই ঝামেলা এড়াতে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন না।

সূত্র: এই সময়