মাথায় নিয়ে দই বিক্রি করে পাঠাগার প্রতিষ্ঠার পর শুরু সমাজসেবা; পেলেন একুশে পদক

বিশেষ প্রতিবেদন
  © সংগৃহীত

২০২৪ সালের ঘোষিত একুশে পদক পাওয়ার তালিকায় ১৫ নম্বরে রয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জিয়াউল হক। সমাজসেবায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ তালিকায় রয়েছেন তিনি।

তিনি ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামের বাসিন্দা। তার একুশে পদক পাওয়ায় আনন্দে ভাসছে পুরো জেলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষ তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জিয়াউল হক গণমধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশে পদকের জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি যোগাযোগ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) এ কে এম গালীভ খানের সঙ্গে। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যান। তিনি আরও জানান, তৎকালীন ইউএনও তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত মনোনয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠান। এরপরেই ২০২৪ সালের ২১শে পদকের জন্য তার নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব ফোন করে প্রথমে মনোনীত হওয়ার বিষয়টি জানান।

জিয়াউল হক আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে জেলায় ঘুরে ঘুরে মাথায় করে দই বিক্রি করি। দই বিক্রির টাকা দিয়ে ১৯৬৯ সালে ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামে জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করি। এরপর থেকেই আমার সমাজসেবা শুরু। এলাকার স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে বই প্রদান, স্কুল-কলেজে বেতন দেয়াসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দিয়ে আসছি। আমার মাধ্যমে শত শত মানুষ উপকৃত হচ্ছে। যত দিন বেঁচে থাকব, মানুষের সেবা করে যেতে চাই।’

একুশে পদকের জন্য মনোনীত হওয়ার বিষয়ে জিয়াউল হক বলেন, ‘এই পদক শুধু আমার একার নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী এ জন্য গর্বিত। এই পদক আমার সমাজসেবাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে।’

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিকে একুশে পদক-২০২৪ প্রদানের তালিকা প্রকাশ করে সরকার। 

এবার ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে মরণোত্তর একুশে পদক পেলেন মৌ. আশরাফুদ্দীন আহমদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী মিয়া (মরণোত্তর)। শিল্পকলার বিভিন্ন শ্রেণিতে ১১ জন পেয়েছেন এই পদক। সংগীতে পেয়েছেন জালাল উদ্দীন খাঁ (মরণোত্তর), বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ, বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর), এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর) ও শুভ্র দেব। অভিনয়ে ডলি জহর ও এমএ আলমগীর, আবৃতিতে খান মো. মুস্তাফা ওয়ালীদ (শিমুল মুস্তাফা) ও রূপা চক্রবর্তী, নৃত্যকলায় শিবলী মোহাম্মদ এবং চিত্রকলায় শাহজাহান আহমেদ বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিংয়ে কাওসার চৌধুরী, সমাজসেবায় মো. জিয়াউল হক ও আলহাজ রফিক আহামদ এ পুরস্কার পেয়েছেন।

এছাড়া ভাষা ও সাহিত্যে এবার একুশে পদক পেয়েছেন চার জন। তারা হলেন মুহাম্মদ সামাদ, লুৎফর রহমান রিটন, মিনার মনসুর ও রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (মরণোত্তর)। শিক্ষায় প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু রয়েছেন এ তালিকায়।

তথ্য: চ্যানেল২৪


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ