কংক্রিটের নগরে গাছ কেটে ছায়া খুঁজি, কী করছে নগর কর্তৃপক্ষ?

তাপপ্রবাহে
  © সংগৃহীত

কংক্রিটের এই নগরে একটু শীতল ছায়ার বড়ই অভাব। চলতি বছর টানা তীব্র তাপপ্রবাহে সেটি টের পাওয়া যাচ্ছে আরও। তপ্ত রোদে ক্লান্ত শরীরটাকে আরাম দিতে মেলে না গাছের ছায়া। মিলবে কীভাবে? আমরা তো ছায়াদায়ী বড় গাছই রাখিনি। গাছ থাকতে বুঝিনি গাছের মর্ম। একেক সময় একেক উপলক্ষে সাবাড় হয়েছে গাছ। কখনো সিটি করপোরেশন কখনো পড়েছে উন্নয়ন প্রকল্পের করাত।

এক সময় ধানমন্ডির সাতমজিদ রোডের সড়ক বিভাজকে বিভিন্ন প্রজাতির শত শত গাছ ছিল। তপ্ত রোদে সড়কে যানজট, সিগন্যালে আটকে থাকা যাত্রীদের ছায়া দিতো। চলার পথে সবুজ গাছপালায় তাকিয়ে চোখের প্রশান্তি পেতেন পথচারীরা। কিন্তু এক বছর আগে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে সব গাছ সাবাড় করেছে খোদ সিটি করপোরেশন। পরে সমালোচনা সামাল দিতে লাগানো হয়েছে বাগান বিলাসসহ কয়েক ধরনের ফুলগাছ।

ঢাকা শহরে গাছ অত্যন্ত মূল্যবান। এগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব নগর কর্তৃপক্ষের। সিটি করপোরেশন আইনে গাছ রক্ষার কথা বলা হয়েছে, কোথাও গণহারে কাটতে বলা হয়নি। আর কাটতে হলে যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। ইচ্ছা থাকলে আধুনিক পদ্ধতিতে গাছ না কেটে স্থানান্তরাও করা যায়।

একইভাবে আগে মতিঝিল থেকে মিরপুর-১৪ নম্বর পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে সারিবদ্ধভাবে ছিল হাজারো গাছ। মেট্রোরেল নির্মাণের সময় সব গাছ কেটে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ। এখন চলার পথে সড়ক বিভাজকে শুধু কংক্রিটের খুঁটি চোখে পড়ে। সড়ক বিভাজকে ছায়া দেবে এমন গাছের পরিবর্তে শোভা পেয়েছে বাগান বিলাসসহ বিভিন্ন ধরনের পাতাবাহার গাছ।

চলতি মাসের শুরু থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। আর যারাই সড়কে বের হচ্ছেন, তপ্ত রোদ থেকে বাঁচার জন্য গাছের ছায়া খুঁজছেন। নাগরিকদের অভিযোগ, অবকাঠামো উন্নয়নের নামে নগরে গাছপালা কেটে মরুভূমির পরিবেশ তৈরি করেছে খোদ সরকারে বিভিন্ন সংস্থা।

পরিবেশবিদ ও নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, নগরে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে গণহারে গাছপালা কাটায় ঢাকা তার বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। এখন তীব্র তাপপ্রবাহে গাছ কাটার খেসারত দিচ্ছেন নাগরিকরা। এ বিষয়ে চরম উদাসীন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এভাবে চললে ভবিষ্যতে নগরে তাপপ্রবাহ ক্রমেই বাড়বে।

ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সামনে থেকে আবাহনী খেলার মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণ পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার। এক বছর আগে এই সড়কের বিভাজকে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুই হাজার গাছ ছিল। ২০২৩ সালের এপ্রিলে হঠাৎ একদিন রাতে সড়ক বিভাজকের গাছ কাটা শুরু করে ডিএসসিসি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ধানমন্ডির বাসিন্দারা। টানা কয়েক দিন গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন, ডিএসসিসি মেয়রকে স্মারকলিপি দেন তারা। কিন্তু তারপরও সিটি করপোরেশন সব গাছ কেটে ফেলে। এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন: কমবে তাপমাত্রা, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে

রোববার (২৮ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, এখন সাতমসজিদ রোডে সড়ক বিভাজকের ওপর রঙ্গন, কামিনী, বাগান বিলাস লাগিয়েছে ডিএসসিসি। কিন্তু চলার পথে পথচারী বা যানবাহনে থাকা যাত্রীদের ছায়া দেবে সড়ক বিভাজকে এমন কোনো গাছ দেখা যায়নি।

ডিএসসিসির প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, সাতমসজিদ রোডের ওই দূরত্বে বেশ কয়েকটি ইউটার্ন ছিল। ফলে গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে সড়কটিতে প্রায়ই যানজট লেগে থাকতো। তাই অপ্রয়োজনীয় ইউলুপ বন্ধ ও সৌন্দর্যবর্ধনে নতুনভাবে উঁচু করে সড়ক বিভাজক তৈরি করে ডিএসসিসি। এ কাজের জন্যই গাছগুলো কাটা পড়েছিল।

ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের বাসিন্দা উজ্জ্বল আহমেদ। আলাপকালে তিনি বলেন, আগে সাতমসজিদ রোডে চলার পথে সড়ক বিভাজকের ওপর থাকা গাছগুলো ছায়া দিতো। গায়ে তেমন তাপ লাগতো না। গাছের দিকে তাকালে চোখেও প্রশান্তি কাজ করতো। এখন সড়ক বিভাজকে একটি গাছও নেই। অথচ চলমান তাপপ্রবাহে একটু ছায়ার জন্য গাছ খুঁজি। এই সড়কের গাছগুলো কেটে আমরা কী হারিয়েছি, কী পেয়েছি তা বুঝে উঠতে পারছি না।’

সাত মসজিদ রোডে গাছ কাটা বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, গাছ কাটার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে আলাদা করে আইন আছে। আমাদের দেশে সেই আইন এবং তার প্রয়োগটা জরুরি। স্বল্প সময়ে আইন না করা গেলেও অন্তত একটা সরকারি নির্দেশনা দিয়ে এটাকে থামাতে হবে। পরবর্তীতে মাস তিনেকের মধ্যে একটা আইন করা ফেলা উচিত।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন, রাজউকসহ সবার উচিত উন্নয়ন দর্শন বদলানো। নগরে যেমন দালান, রাস্তা দরকার; নগরে তেমন সবুজ দরকার। সিটি করপোরেশন এলাকাবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে করে গাছ লাগাতে বা ছাদবাগানের কথা বলতে পারে। যাতে করে গরম কমে, বায়ুদূষণও কমে। এভাবে ঢাকা শহরকে সবুজায়ন করতে হবে।

মেট্রোরেলের নিচে ছায়ায় ভালো কোনো গাছ বেড়ে উঠবে না। তাই মেট্রোরেলের নিচে বাগান বিলাসসহ পাতাবাহার গাছ লাগাতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর মেট্রোরেল লাইনের দুপাশের ফুটপাতে গত বছর বর্ষার আগে কাঠবাদাম, বকুলসহ অন্য প্রজাতির গাছ লাগিয়েছে ডিএনসিসি। এমনটাই বলেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

২০১৬ সালে পান্থকুঞ্জ পার্কের ভেতর গাছ কেটে পাবলিক টয়লেট, এসটিএস নির্মাণ করেছিল ডিএসসিসি। এখন সেখানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজের জন্য আরও গাছ কাটা হয়েছে। সোনারগাঁও রোডের বাসিন্দা মাসুম তালুকদার বলেন, ‘আগে এই পার্কটিতে ছোট-বড় মিলে তিন শতাধিক গাছ ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে গত আট বছরে ২৫০টির মতো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এখন সেখানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের খুঁটি নির্মাণের জন্য আরও গাছ কাটা হবে।’

ডিএসসিসির পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. খায়রুল বাকের জাগো নিউজকে বলেন, ‘সড়ক বিভাজকের ওপর গাছ লাগালে ‘বিভাজক’ নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর দক্ষিণ সিটিতে চওড়া ফুটপাত না থাকায় গাছ লাগানো যাচ্ছে না। এখন যে কয়েকটি ফুটপাতে গাছ আছে, সেগুলোর যত্ন নেওয়া হচ্ছে। আর যে এলাকায় চওড়া ফুটপাত নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে গাছ লাগানোর জন্য জায়গা রাখা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে আমরা দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন পার্ক, মাঠ ও খালপাড়ে প্রায় পাঁচ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এবার কামরাঙ্গীরচরে আদি বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা আছে।’

২০২২ সালে গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, মোহাম্মদপুর থেকে বছিলা ও ২০২৩ সালে মহাখালী উড়ালসড়ক থেকে গুলশান-১ গোল চত্বর পর্যন্ত সড়ক বিভাজক পুনর্নির্মাণ করে ডিএনসিসি। এতে গাছের শিকড় কাটা পড়ে হেলে পড়েছিল অর্ধশত গাছ। এর মধ্যে মহাখালী অংশে বড় বড় গাছ কাটা পড়েছিল বেশি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহাখালী থেকে গুলশান-১ পর্যন্ত প্রায় ছয় ফুট চওড়া সড়ক বিভাজক তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভাজকের মাঝে প্রায় চার ফুট জায়গায় মাটি ফেলে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। পাশাপাশি দুই পাশের ফুটপাতে কাঠবাদাম, বকুল, সোনালু গাছও লাগানো হয়েছে। গাছগুলো লম্বা হয়েছে পাঁচ থেকে আট ফুট পর্যন্ত।

অন্যদিকে গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডে বিভিন্ন প্রজাতির হাজারো গাছ লাগানো হয়েছে। এসব গাছ এরই মধ্যে সড়কে ছায়া দিতে শুরু করেছে। আর গাছগুলোর কারণে সড়কটির সৌন্দর্যও বেড়েছে। গাছ যে এই শহরের জন্য কত প্রয়োজনীয় তা এ সড়কটি ভবিষ্যতে আরও প্রমাণ করবে।

ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেল সূত্র জানায়, গত বছর মহাখালীতে গাছ কাটায় সমালোচনার মুখে নগরে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দুই লাখ গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঘোষণা অনুযায়ী ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত, সড়ক বিভাজক, পার্কসহ বিভিন্ন এলাকায় ৯০ হাজার ২৯৫টি কাঠবাদাম, ছাতিম, বকুল, সোনালু, জারুল, রসকাউ, কাটামেহেদি, রঙ্গন, চায়না টগর গাছ লাগানো হয়েছে। আসন্ন বর্ষায় আরও এক লাখ ২০ হাজার গাছ লাগানো হবে।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, ‘গত বছর মহাখালী থেকে গুলশান-১, শক্তি ফাউন্ডেশন ও মেটলাইফ অ্যালিকোর সহযোগিতায় নেভি গেট থেকে ফার্মগেট পুলিশ বক্স, শক্তি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় লাউতলা খালপাড়, ইউএনডিপি, লংকাবাংলা ও শেভরনের সহযোগিতায় কয়েকটি বস্তি এলাকায় গাছ লাগানো হয়েছে। এসব গাছের ৮০ শতাংশ বেঁচে আছে।’

তিনি বলেন, ‘চলতি বর্ষায় গাছ লাগাতে ডিএনসিসি মেয়রের নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পরপরই গাছ লাগানো শুরু হবে। পাশাপাশি এসব গাছ দেখভালের জন্য ৪৩ জন মালি নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান।’

ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে কুড়িল উড়ালসড়ক থেকে রামপুরা পর্যন্ত প্রগতি সরণি সড়কে। এ সড়কের সাত কিলোমিটার অংশে সড়ক বিভাজকে হাতে গোনা কিছু গাছ দেখা গেছে। আর ফুটপাতে গাছ নেই বললেই চলে। ডিএনসিসির অন্য এলাকায় গাছ লাগানো হলেও প্রগতি সরণিতে কেন গাছ লাগানো হচ্ছে না তা জানতে চাইলে মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, গত বছর প্রগতি সরণির সড়ক বিভাজক, ফুটপাতে প্রায় তিনশ গাছ লাগিয়েছিলাম। কিন্তু তখন জানতে পারি এই সড়কের নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের কাজ হবে। আবার চলতি বছর ওয়াসা খোঁড়াখুঁড়ি করবে। তাই প্রগতি সরণিতে গাছ লাগানো হয়নি।’

নগর–পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘ঢাকা শহরে গাছ অত্যন্ত মূল্যবান। এগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব নগর কর্তৃপক্ষের। সিটি করপোরেশন আইনে গাছ রক্ষার কথা বলা হয়েছে, কোথাও গণহারে কাটতে বলা হয়নি। আর কাটতে হলে যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। নিজের মনে করে গাছ কাটা যাবে না। ইচ্ছা থাকলে আধুনিক পদ্ধতিতে গাছ না কেটে স্থানান্তরাও করা যায়।’

আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘নগরের বর্ধিত অংশ তথা নতুন ওয়ার্ডগুলোতে এখনো প্রচুর গাছ লাগানোর সুযোগ আছে। সিটি করপোরেশনের এ কাজটি এখনই গুরুত্ব দিয়ে করা উচিত। আর আমাদের নিজ নিজ আঙিনা যেখানে গাছ লাগানোর সুযোগ আছে সেখানে আমরা গাছ লাগাতে পারি। আমরা দেখেছি সামান্য ফুলের টবের মধ্যেও যত্ন নিলে গাছ অনেক বড় হয়ে যায়।’

২০১৬ সালের ২৬ জুন মতিঝিল থেকে মিরপুর-১৪ নম্বর হয়ে উত্তরা উত্তর পর্যন্ত মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর মধ্যে মতিঝিল, সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১, পল্লবী পর্যন্ত সড়ক বিভাজকের ওপর মেট্রোরেলের খুঁটি বসানো হয়েছে। ফলে আগে এ সড়ক বিভাজকে যেসব গাছ ছিল, তার সব কাটা পড়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে মেট্রোরেলের পুরো পথে নিচে কোনো গাছ দেখা যায়নি। নিচে শুধু বাগান বিলাসসহ বিভিন্ন ধরনের পাতাবাহার গাছ লাগানো হয়েছে। কিন্তু দুই পাশের ফুটপাতে কোনো কাছ লাগায়নি ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি।

এদিকে মেট্রোরেলের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্কের। এই পার্কের সব কাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সেখানে এখনো মেট্রোরেলের সরঞ্জাম স্তূপ করে রাখা। এখন দেখে বোঝার উপায় নেই আগে এখানে বড় একটি ছায়াদায়ী পার্ক ছিল।

মেট্রোরেল নিচে ও সড়কের দুপাশের ফুটপাতে গাছ লাগানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেট্রোরেলের নিচে ছায়ায় ভালো কোনো গাছ বেড়ে উঠবে না। তাই মেট্রোরেলের নিচে বাগান বিলাসসহ পাতাবাহার গাছ লাগাতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর মেট্রোরেল লাইনের দুপাশের ফুটপাতে গত বছর বর্ষার আগে কাঠবাদাম, বকুলসহ অন্য প্রজাতির গাছ লাগিয়েছে ডিএনসিসি। এর মধ্যে কোথাও যদি বাদ থেকে থাকে, চলতি বর্ষা মৌসুমে ফের লাগানো হবে। একইভাবে নগরের অন্য সড়ক বিভাজকে যেখানে গাছ লাগানোর মতো জায়গা আছে, সেখানেও গাছ লাগানো হবে।’

 


মন্তব্য