ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটযুদ্ধ আজ, শঙ্কায় ইংল্যান্ডের সুপার এইট

ক্রিকেট
  © ফাইল ছবি

ক্রিকেট ক্রিকেটই। সেটা যুদ্ধ হয় কী করে। দুদলেই ১১ জন খেলোয়াড়। দিনশেষে কেউ হারে কেউ জেতে। তবু ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ যেন বারুদে ঠাসা দ্বৈরথ। ওয়াঘা সীমান্তের এপার-ওপার যেন বিস্ফোরোন্মুখ। ক্রিকেট সংস্কৃতি সেখানে গৌণ। পরস্পরের প্রতি বৈরী মনোভাবাপন্ন দুই পড়শির যুদ্ধংদেহী মনোভাব বোঝাতেই বোধহয় ইংরেজিতে ‘রাইভালরি’ শব্দের উৎপত্তি।

এই পটভূমিতে আজ রবিবাসরীয় মহারণে মুখোমুখি রোহিত শর্মার ভারত ও বাবর আজমের পাকিস্তান। নিউইয়র্কের গা ঘেঁষে আইজেনহাওয়ার পার্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি ২০ বিশ্বকাপের সবচেয়ে মশলাদার, মেগা ম্যাচে লড়বে ২০০৭ এর চ্যাম্পিয়ন ভারত এবং ২০০৯ এর শিরোপাজয়ী পাকিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচ মাঠে বসে উপভোগ করবেন ৩৪ হাজার দর্শক। আর এই গ্রহের ক্রিকেটবুভুক্ষ প্রতিটি গৃহকোণে কোটি কোটি সমর্থকের চোখ থাকবে টিভির পর্দায়। সন্দেহাতীতভাবে করাচি-কলকাতা, লাহোর-লখনৌ মিলে যাবে একবিন্দুতে। যখনই ক্রিকেট মাঠে এ দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সাক্ষাৎ হয়, তখনই গোটা বিশ্ব ভাগ হয়ে যায় দুই ভাগে। বেশুমার কথা চালাচালি হয়। এবারের মোদ্দা কথা, আত্মপ্রত্যয়ী ও ভারসাম্যপূর্ণ দল ভারত ঢের এগিয়ে অননুমেয়, অথচ দুর্বলচিত্তের বাবর আজমদের চেয়ে। তবে কুড়ি-বিশের বিনোদনে বাগড়া দিতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ৫১ শতাংশ।

বলা হয়, যে কোনো টুর্নামেন্টে জয় দিয়ে শুরু করলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ হয়ে যায়। সেই হিসাবে আয়ারল্যান্ডকে অনায়াসে হারিয়ে কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপ শুরু করা ভারত রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। উলটোদিকে, পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছে সহআয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সুপার ওভারে হেরে। 

পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে তো বটেই, মনস্তাত্বিকভাবেও ভারত এগিয়ে, পাকিস্তান পিছিয়ে। এই সংস্ককণে এ পর্যন্ত ১২ ম্যাচে ভারতের নয়টি এবং পাকিস্তানের তিনটি জয়েও প্রমাণিত, কারা এগিয়ে। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটযুদ্ধকে বলা হয় ‘মাদার অব অল ব্যাটেল’। সব যুদ্ধের জননী। অনেকটা ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথের মতো। 

এদিকে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভারত বিশ্বকাপে খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। আশা ছিল শিরোপা জয়ের। অথচ, শেষটায় এমন ভরাডুবি দেখতে হয়েছে দলটিকে। যে কোনো রকমে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করে বিশ্বকাপ শেষ করেছিল তারা। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সেই শঙ্কা জাগিয়েছে ডিফন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট ভাগ করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে বসেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাতে শঙ্কায় এখন ইংল্যান্ডের সুপার এইটে খেলা।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের সবশেষ ম্যাচে ৩৬ রানে হেরেছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ২০১ রানের জবাবে ইংল্যান্ড তুলতে পেরেছে মোটে ১৬৫ রান। আর তাতেই শঙ্কায় দলটির সুপার এইটে খেলা।

কেননা, ‘বি’ গ্রুপে চার ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট এখন মাত্র ১। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে বাতিল হওয়ায় স্কটল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগ করেছে তারা। এদিকে স্কটল্যান্ড নামিবিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান তালিকার ২ নম্বরে। হাতে বাকি এখনও ২ ম্যাচ। যদি কোনো ভাবে সেই দুই ম্যাচের একটিতেও জয় পায় তারা। তাতে তাদের পয়েন্ট হবে ৫। অন্যদিকে পরের দুই ম্যাচে জয় পেলে ইংল্যান্ডের পয়েন্টও হবে ৫। সেক্ষেত্রে দেখা হবে রান রেট। এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের তুলনায় যেখানে বেশ এগিয়েই রয়েছে স্কটিশরা।

অন্যদিকে ২ ম্যাচের ২টিতেই জয় তুলে এই গ্রুপ থেকে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর একটি ম্যাচ জিতলেই সুপার এইট নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের। তাই বলতে গেলে কঠিন সময়ই সামনে অপেক্ষা করছে ইংল্যান্ডের। সামনে স্কটিশদের দুই ম্যাচের দুটিতেই হারের প্রত্যাশা করার সঙ্গে বড় ব্যবধানে জিততে হবে ইংল্যান্ডকে। সঙ্গে নির্ভর করতে হবে ভাগ্যের ওপর।