ঢাবিতে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ সম্প্রসারণ কার্যক্রম‌ উদ্বোধন

ঢাবি
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের একাংশ  © টিবিএম ফটো

সর্বজনীন কুইক রেসপন্স কোডের (কিউআর) মাধ্যমে নগদ লেনদেনহীন ব্যবস্থা ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ ’ সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে সেবাটির সম্প্রসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, নাটোর ও রংপুর জেলাকে এ সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আজ সোমবার (২০ মার্চ) বিকাল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ মিলনায়তনে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ অন বিজনেস এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও বিভিন্ন ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, নাটোর ও রংপুর জেলার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

ক্যাশলেস

বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে এ উদ্যোগে যেসব ব্যাংক সম্পৃক্ত রয়েছে, সেগুলো হলো- ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, পূবালী ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংক। এ ছাড়া মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান বিকাশ, এমক্যাশ, রকেট এবং আন্তর্জাতিক পরিশোধ স্কিম মাস্টারকার্ড, ভিসা ও অ্যামেক্স এ সেবায় যুক্ত হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমরা এই সেবা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। প্রতি বছর কোরবানির পশু কেনার সময় শোনা যায় অনেকের পকেটে টাকা নাই। চুরি হয়ে যায়। নতুন এ নগদ লেনদেনহীন ব্যবস্থা এ সমস্যা বন্ধের পাশাপাশি কেনাকাটাকে আরও সহজ ও সময় সাশ্রয়ী করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, টাকা বহন, প্রটেকশন ইত্যাদি কাজে প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচুর টাকা খরচ করতে হয়। এই টাকাটা আসলে জনগণের ট্যাক্সের টাকা। আমরা যদি এই ক্যাশলেস ব্যবস্থা চালু করতে পারি তাহলে টাকা বহন, নিরাপত্তা ইত্যাদি কাজগুলো অনেক সাশ্রয়ী হবে। এক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের মাঝে এ সেবা ছড়িয়ে দেয়া জরুরি বলে তিনি মনে করেন। এ সেবাকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন গভর্নর আব্দুর রউফ।

এমন উদ্যোগ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতার মাসে এমন একটি মহান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন যেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। এর সূচনা হয়েছিল ২০১৯ সালে কিন্তু এটির সম্প্রসারণে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং সেই সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এজন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ জানাই।

উপাচার্য বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্জনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে সেবার গুণগত মান ও স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হলো।  এটির পুরো মাত্রায় সফলতা আনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সহযোগিতা করবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত  ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’র কার্যক্রম শুরু হয়। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর শুভ সূচনা করে। এ সেবার আওতায় বাংলা কিউআর নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত যে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীরা অন্য যে কোনো ব্যাংক বা এমএফএস অ্যাকাউন্টধারী ব্যবসায়ীদের কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোড স্ক্যান করে পণ্য বা সেবামূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।