প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে শহীদ মিনারে মানববন্ধন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০৯ PM , আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১৬ PM

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর করা ‘ আমাগো মাছ, মাংস ও চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এক শিশুর ছবিতে অন্য কারো উদ্ধৃতি ব্যবহার করা স্বাধীনতাকে কটাক্ষের শামিল আখ্যা দিয়ে এই পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(৬ এপ্রিল) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘স্বাধীনতা-সচেতন নাগরিক সমাজ’ এর ব্যানারে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। এসময় মানববন্ধন থেকে প্রথম আলো পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল ও চক্রান্তকারীদের শাস্তির দাবি জানান বক্তারা। এতে সংহতি জানাতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতাজ্জামান।
এসময় উপাচার্য বলেন, 'আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশের নাম উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বারবার উচ্চারিত হয়। একই সঙ্গে একটি নির্বাচিত সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এ সময়ে নানা অপকৌশল শুরু হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মৌলিক দায়িত্ব।'
উপাচার্য বলেন, 'একটি বিশেষ পটভূমির উদ্দেশ্যে আমাদের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। যেসব পত্রিকা এসব অপকর্মে যুক্ত আছে, তাদের বিরুদ্ধে সবার সম্মিলিত সোচ্চার হওয়াই সময়ের দাবি। এছাড়া, মহান স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এ ধরনের প্রয়াস অব্যহত থাকবে বলে জানান উপাচার্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, 'প্রথম আলো এখন স্বাধীনতা বিরোধীদের মুখপত্র। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। তাদের এসব উদ্দেশ্য প্রণোদিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে তারা স্বাধীনতা বিরোধীদের একত্রিত করার চেষ্টা করেছে। আমরা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শিক্ষকরা কোন বিবৃতি দিলে তারা আমাদের নাম ছাপায় না। যেখানে অন্য পত্রিকায় আমাদের বিবৃতি ছাপায়।'
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, 'আমরা বাংলাদেশ বিরোধী অপশক্তিদেরকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য এখানে সমবেত হয়েছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যে শক্তিগুলো আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ তাদের কখনো মেনে নেয়নি আর নিবেও না। তাই আমরা আজকে এই কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছি। এই শক্তিকে প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে।'
নাট্যব্যক্তিত্ব পিযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'এক সময় বাসন্তীকে জাল পরিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছিল তৎকালীন জাতীয় দৈনিক। ঠিক তেমনি স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রথম আলোর অর্বাচীন সাংবাদিক ষড়যন্ত্রের জাল তৈরি করল। এটি হঠাৎ করেই হয়নি। একজন মফস্বল সাংবাদিক সংবাদ পাঠাল, এটি হঠাৎ করেই পাবলিশড হয়ে গেছে এরকম না। ওই গোষ্ঠী সুপরিকল্পিতভাবে এটি করেছে।'
কর্মসূচিতে স্লোগান ৭১, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, জাতীয় ওলামা সমাজ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোট, আন্তর্জাতিক শিল্পী সাহিত্যিক সম্মিলিত পরিষদ, বাংলার মুখ, বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পরিষদ, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংঘ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম ব্রিগেড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ, বিচ্চু বাহিনী, মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যমঞ্চ ও বৃত্তান্ত ৭১ ফাউন্ডেশনসহ ৪০টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক-মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগঠন এবং বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনয় শিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, চিত্রশিল্পী ও আইনজীবীবৃন্দ। পুরো কর্মসূচি পরিচালনায় ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।