আইসিটি খাতে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি অপরিহার্য: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

ঢাবি
  © সংগৃহীত

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্যে আইসিটি খাতে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য উল্লেখ করে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার বলেন, প্রযুক্তিতে নারীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই দেশ, সমাজ এবং অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। নারীদের আর্থিকভাবে সক্ষম করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্যে আইসিটি সেক্টরে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। 

বুধবার (২৪ এপ্রিল ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে “আইসিটি দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানসহ মেয়েদের ক্ষমতায়ন: চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

‘বঙ্গমাতা বক্তৃতামালা’র অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের চাহিদা প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এই খাতে আমাদের দেশের নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত কম। নারীদেরকে এই খাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। 

“বর্তমানে দেশে মোট ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ, যার ৯ শতাংশ নারী । আবার মোট উদ্যোক্তাদের শতকরা ৩১ দশমিক ৬১ শতাংশ নারী। বাংলাদেশের সাতটি বিভাগের ১৬টি জেলার ৫০ জন প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও ই-কমার্স প্লাটফর্মে যুক্ত করার মাধ্যমে তাদের ব্যবসার উন্নয়ন হয়েছে।”

প্রযুক্তি নারীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রায় ১৫ শতাংশ নারী কাজ করছেন। নারী বান্ধব ই-কমার্স প্লাটফর্ম এবং কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সেবাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীকে তথ্য ও প্রযুক্তিতে অন্তর্নিবেশ করা হচ্ছে।
“নারীরা বিশেষ করে এর থেকে উপকৃত হচ্ছেন। কারণ এটি তাদের আরও স্বাবলম্বী হতে এবং কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করছে। সরকার বিশ্বাস করে যে ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক নারী প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করবে।” 

শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে সরকার আইসিটি খাতে নজর দিচ্ছে এবং নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে। বাংলাদেশে প্রযুক্তির বিকাশ ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং সামগ্রিকভাবে দেশের সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

“এ দেশের উন্নয়নে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ রয়েছে। কারণ এদেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক প্রায় নারী। নারীরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের শামিল করতে পারে। উন্নত দেশ গড়ার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহার নারীকে তার অধিকার রক্ষায় যেমন এগিয়ে নিতে পারবে, তেমনি তার ক্ষমতায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগে আছি, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা  স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। এই স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য দরকার স্মার্ট নাগরিক। এক্ষেত্রে নারীদের পিছিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নাই। নারীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। 

“নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। আমরা যদি ২০১৪-১৫ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান দেখি, তাহলে দেখা যাবে সেখানে ৫৫ শতাংশ ছাত্র এবং ৪৫ শতাংশ ছাত্রী। আজকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এসে ৫১ শতাংশ ছাত্রী, ৪৯ শতাংশ ছাত্র।নারী শিক্ষায় সরকারের যে পদক্ষেপ, এটার ফল কিন্তু পাচ্ছি আমরা।”

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসেন। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া হক।


মন্তব্য