ঈদ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা

ঈদ
  © টিবিএম

গ্রাম ও শহরের কাঠামোগত পার্থক্য থাকলেও ঈদ উৎযাপনে কমতি নেই গ্রাম-গঞ্জেও। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে শহরে পার্ক থেকে শুরু করে আছে বিনোদনের নানা স্থান। কিন্তু গ্রামীণ মানুষের ঈদ উদযাপনে এমন স্থান না থাকলেও আছে তাদের গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য। লাঠি খেলা তাদের মধ্যে অন্যতম।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং ঈদ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৮ জুন) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের এলংজানি গ্রামে বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উল্লাপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি উপস্থিত ছিলেন।

এ খেলায় স্থানীয় খেলোয়াড় ছাড়াও আশপাশের গ্রাম থেকে বেশ কয়েকটি দল অংশ গ্রহণ করে।খেলাকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।

লাঠি খেলা আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী কে. এম. আব্দুল আলীম জানান, আধুনিক সভ্যতার আড়ালে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে আমাদের এ আয়োজন।

তিনি আরো বলেন, 'গ্রামীণ মানুষের আধুনিক বিনোদনের কমতি থাকলেও এই লাঠি খেলা তাদের সুখ দুঃখের সারথি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম কে শহর করার যে আশা ব্যক্ত করেছেন তা বাস্তবায়নে বাংলার ঐতিহ্যকে এগিয়ে রাখতে হবে।'

এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ দূর করতে আর হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিপথগামী যুব সমাজের মাদকাসক্ত, মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে লাঠি খেলার মত আয়োজন পথ দেখাবে, যুক্ত করবে সম্প্রীতির বাঁধনে।

এসময় ঢাক-ঢোলের বাজনায়, গানের তালে তালে যেন এ আনন্দময় উৎসব আয়োজন। ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার তালে তালে চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন শত শত দর্শক। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিলো উৎসবের আমেজ। লাঠি খেলা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শকরা। 

এছাড়া অনুষ্ঠানে ওলামা লীগের সভাপতি ড. কে. এম. মমিন সিরাজী, উল্লাপাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাইদ স্বপন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্লাবনী আক্তার সুইটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, লাঠি খেলা লাঠি দিয়ে আত্মরক্ষা শেখায়। ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার জমিদাররা (পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম বঙ্গ) নিরাপত্তার জন্য লাঠিয়ালদের নিযুক্ত করত। ইংরেজবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে বাঙালি লাঠিয়ালেরা ইংরেজদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছিলেন বহুবার।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ