অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি : ফটিকছড়ির জাবেদকে খুঁজছে র‍্যাব!

ফটিকছড়ি
গ্রেপ্তারকৃত আসামী ‘হুমায়ুন’ ও ‘রাজু’   © টিবিএম

কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা কাজী জাফর ছাদেক রাজু। তার সহচর জেলার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ধাউনখালী এলাকার বাসিন্দা হুমায়ূন কবির। দুজনেরই অভিজ্ঞতা রয়েছে জেল খাটার। মাদক মামলায় একই কারাগারে বন্দি ছিলেন তারা। সেই কারাগারেই ছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মো. জাবেদ। তিনিও মাদক মামলার আসামি। কারাবন্দি অবস্থায় তিনজনের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা ছাড়া পান। কারামুক্ত হয়ে গড়ে তোলেন অবৈধ অস্ত্রের কারবার। তাদের কাছে এসব অবৈধ অস্ত্র আসে খাগড়াছড়ির একটি চোরাচালান চক্রের কাছ থেকে। সংগ্রহ করা অবৈধ অস্ত্র বিক্রি হয় কক্সবাজারসহ সারা দেশে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের ধাউনখালী থেকে হুমায়ুন এবং জেলা শহরের কলাতলীর মেরিন ইকো রিসোর্ট থেকে রাজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি থ্রি জিরো থ্রি রাইফেল ও গুলি জব্দ করা হয়। বুধবার র‌্যাব-১৫ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বাহিনী আরও বলছে, ফটিকছড়ির জাবেদকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে অস্ত্র চোরাচালান চক্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) আবু সালাম চৌধুরী জানান, এসব অবৈধ অস্ত্র খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাচালান করা হয়। খাগড়াছড়ির স্থানীয় একটি চক্র এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তারা এজেন্টের মাধ্যমে সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ করে। প্রতিটি বিদেশি পিস্তল ৮০-৯০ হাজার টাকায় এজেন্টের কাছে বিক্রি করে চোরাচালান সিন্ডিকেট। পরে তা বিভিন্ন হাত বদল হয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের কাছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়।

এ র‍্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, তারা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে ধাওনখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করেন। তার শোবারঘরে খাটের তোশকের নিচে পাওয়া গেছে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি। এগুলোর উৎস সম্পর্কে হুমায়ুন জানান– কলাতলীর রাজুর কাছে তিনি সংগ্রহ করেন। পরে রাজুর মালিকানাধীন কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে অবস্থিত মেরিন ইকো রিসোর্টে অভিযানে যায় র‍্যাব। সেখানে রাজুর বিশ্রাম কক্ষ থেকে থ্রি জিরো থ্রি রাইফেল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা আবু সালাম জানান, রাজু, হুমায়ুন ও জাবেদ ২০২০ সালে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে একই কারাগারে বন্দি ছিলেন। সেখানে তাদের পরিচয় এবং সখ্যতা গড়ে ওঠে। চোরাচালান সিন্ডিকেট সদস্য জাবেদের কাছ থেকে সরাসরি অবৈধ অস্ত্র কেনেন রাজু। তার কেনা অস্ত্র সরবরাহ করেন হুমায়ুনসহ চক্রের আরও কিছু সদস্য। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প, রামুর গর্জনিয়ার চক্র, মাদক কারবারিসহ সন্ত্রাসীদের কাছে এসব অস্ত্র বিক্রি করেন। প্রান্তিক পর্যায়ে দেড় থেকে ২ লাখ টাকায় তারা এসব অবৈধ অস্ত্র দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছেন।

আবু সালাম বলেন, রাজু ও হুমায়ুনকে জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে। রাজু ও হুমায়ুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ