তীব্র গরমে ঝলসে যাচ্ছে চা গাছ; পঞ্চগড়ে অর্ধেকের বেশি কারখানা বন্ধ

গরম
  © বাসস

এমনিতেই চা চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। এর ওপর টানা তাপপ্রবাহে গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশে। ফলে টানা অনাবৃষ্টি আর তাপপ্রবাহে পুড়ছে উত্তরের চা বাগান। ঝলসে যাচ্ছে চা গাছ, কুঁকড়ে যাচ্ছে গাছের কুঁড়ি ও কচি পাতা। সেচ দিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। চাহিদা মত পাতা না পেয়ে বন্ধ হয়ে গেছে জেলার অর্ধেকের বেশি চা কারখানা। এতে চলতি মৌসুমে কাঙ্খিত উৎপাদন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এবার বড় ক্ষতির মুখে দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল পঞ্চগড়ের ক্ষুদ্র চা বাগান মালিকরা। চা বোর্ডের তথ্যমতে, ভালো মানের চা উৎপাদনের উপযুক্ত তাপমাত্রা ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু বর্তমানে পঞ্চগড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। খরার কারণে চায়ের কচি পাতা ও কুঁড়ি কুকড়ে যাচ্ছে। চা গাছে লাল মাকড়সা, লুপারসহ পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বেড়ে গেছে। সেচ দিয়েও গাছ সতেজ হচ্ছে না।

একজন চা চাষী বলেন, ‘রোদে চা গাছ মারা যাচ্ছে। সেচ দেওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যে আবার শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি সেচ দিয়ে আমরা কুলাতে পারছি না। অনাবৃষ্টির কারণে এই খড়া আর খড়ায় চা গাছ মরে যাচ্ছে। চা গাছ কোকড়া হয়ে চা পাতা ঝড়ে যায়।’

পর্যাপ্ত পাতার অভাবে এরই মাঝে বিভিন্ন কারখানায় বন্ধ হয়ে গেছে চা উৎপাদন।

জেলার সাজেদা-রফিক চা কারখানার পরিচালক আসাদুজ্জামান সুমন বলেন, ‘মার্চ মাসে আমাদের চা পাতা ক্রয় এবং কারখানা চালুর পর বেশিদিন চালাতে পারিনি খড়ার কারণে। নরমালি এই সময় কিছু বৃষ্টি হয়। কিন্তু এ বছর এখনও বৃষ্টি নেই।’

গত মৌসুমে পঞ্চগড়ে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে রেকর্ড পরিমান এক কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি তৈরি চা উৎপাদন হয়। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এবার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ‘অন্যান্য বছর এই সময়ে যে চা উৎপাদন হয়, এ বছর খড়ার কারণে তা হবে না। ২৮ টি চালু কারখানার মধ্যে পাতার অভাবে অর্ধেক বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চা চাষীদের সেচসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

চলতি মৌসুমে পঞ্চগড়ে ২ কোটি কেজি চা উৎপাদনের আশা করেছিল চা বোর্ড।


মন্তব্য