সিরাজগঞ্জ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৬৮ মেগাওয়াট

বিদ্যুৎ
  © ফাইল ছবি

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর তীরে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসের প্রথম দিকে কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে ৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। যা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা বলেন, সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে যমুনা নদীর তীরে ২১৪ একর জমিতে বসানো হয়েছে ২৭ হাজার পিলার। এই পিলারের ওপর বসানো হচ্ছে শক্তিশালী সোলার প্যানেল। ৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার খরচের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি। এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। জ্বালানি আমদানির ওপর চাপ কমাতে দেশে মোট ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ হচ্ছে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে যমুনা নদীর তীরে। নতুন এই প্রকল্প জেলায় শিল্প কারখানা স্থাপনের পথ সুগম করবে। 

প্রকল্প ব্যয় ৮৭ দশমিক ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (চুক্তিকালীন ডলারের বিনিময় হার ১০৫ টাকা হিসাবে প্রায় ৯২১ কোটি টাকা)। যৌথ অর্থায়নে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৫০ শতাংশ মালিকানায় রয়েছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। অর্ধেক মালিকানা চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি)। চরের এই জমিতে করা যাবে মৌসুমি আবাদও। সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির বাস্তবায়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আগামী জুনের প্রথম দিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে পতিত চরের জমিতে সারিবদ্ধ ও সুউচ্চ ২৭ হাজার পিলারে বসানো হয়েছে। আর এসব পিলারের ওপর বসানো হয়েছে দেড় লক্ষাধিক সোলার প্যানেল। সোলার প্যানেলের নিচের জমি এখন সম্পূর্ণ কৃষিবান্ধব। এই জমিতে করা যাবে মৌসুমি ফসলের আবাদ। বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি (বিসিআরইসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। 

চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) ডেপুটি ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মারুফ হোসেন বলেন, ‘৭৫ ভাগের ওপরে কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আশাবাদী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব। ইতিমধ্যে ২৭ হাজার পিলার স্থাপন করা হয়েছে। পিলারের ওপরে সোলার প্যানেল বসানোর কাজও শেষের দিকে। ভবনগুলোর কাজও ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে জুনের প্রথম সপ্তাহে উৎপাদনে যাব।’ 

বাংলাদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম এন্টার প্রাইজের প্রজেক্ট ম্যানেজার মাসুদুর রহমান বলেন, সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দিন-রাত শ্রমিকেরা কাজ করছেন। কন্ট্রোল বিল্ডিং, অফিসার ডরমিটরি, রেস্টহাউস, নিরাপত্তা ভবনসহ অন্যান্য কাজও শেষ পর্যায়ে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ব্যতিক্রম। কেন্দ্রটিতে উঁচু পিলারের ওপর সোলার প্যানেল বসানোর কারণে নিচে বিভিন্ন মৌসুমি শাক-সবজি চাষ করা হবে। এতে বিদ্যুৎ ও উৎপাদন হবে আবার ফসলের চাষাবাদ করা যাবে।


মন্তব্য