জ্বালানি চাহিদা মেটাতে ওমান থেকে এলএনজি আমদানি করবে সরকার

জ্বালানি
  © ফাইল ফটো

দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে ওমানের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড (ওকিউটি) এর কাছ থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে এলএনজি আমদানির জন্য ১০ বছর মেয়াদে চুক্তি করছে সরকার। এই চুক্তির অধীনে ২০২৬ সাল থেকে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত দেশটি থেকে ২০৪ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে।

সূত্র জানায়, দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে কক্সবাজারের মহশেখালীতে দৈনিক ৫০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। ভাসমান টার্মিনাল দুটির মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহের জন্য পেট্রোবাংলা ও কাতারের রাস লাফ্যান লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (কাতারগ্যাস) এর মধ্যে ১৫ বছর মেয়াদী এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল (বর্তমান নাম ওকিউ টেড্রিং লিমিটেড-ওকিউটি) এর সঙ্গে ১০ এলএনজি আমদানি লক্ষ্যে এলএনজি সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এসপিএ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ১ জুন কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি-এর সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদী এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে এলএনজি এসপিএ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া, চাহিদার আলোকে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে দর প্রস্তাব আহ্বানের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় কাতার গ্যাস থেকে ২.৫ এমটিপিএ এবং ওকিউটি থেকে ১.০ এমটিপি মোট ৩.৫ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি হচ্ছে। কাতার এনার্জি ট্রেড্রিং এলএলসি থেকে ২০২৬ সাল থেকে ১.৫ এমটিপি গ্যাস আমদানি করা হবে। বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়াজনিত চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় দুটি এফএসআরইউ তে ৬.৫ এমটিপিএ (৮৫০ এমএমসিএফডি এর সমতূল্য) এলএনজি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালীতে ২০২৬ সাল নাগাদ দৈনিক ৬০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন ৩য় এফএসআরইউ স্থাপনের লক্ষ্যে সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং কো. লি. এর সঙ্গে এবং পটুয়াখালীর পায়রাতে ৫০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন ৪র্থ এফএসআরইউ স্থাপনের লক্ষ্যে এক্সেলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড এর সঙ্গে নেগোশিয়েশন চলমান রয়েছে।

সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। গ্যাসের ঘাটতির ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে এবং গ্যাসের উর্ধ্বমূল্য বিবেচনায় প্রয়োজনে বর্ধিত হলেও গ্যাস সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়। এ অবস্থায় স্পট মার্কেট থেকে উচ্চ মূল্যে এলএনজি আমদানির বর্ধিত ব্যয় নির্দিষ্ট শ্রেণির ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে আদায়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ১৪ টাকা ঘনমিটার, ক্রাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৩০ টাকা ঘনমিটার এবং বাণিজ্যিক (হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য) ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৩০.৫০ টাকা ঘনমিটার নির্ধারণ করা হয়। যা গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হয়েছে। সে লক্ষ্যে দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় আরও এলএনজি আমদানি করা প্রয়োজন।

এ অবস্থায় জি টু জি ভিত্তিতে ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ১০ বছর মেয়াদে ২০২৬ সালে ৪ কার্গো এলএনজি, ২০২৭ সালে ১৬ কার্গো, ২০২৮ সালে ১৬ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৯ সাল থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২৪ কার্গো করে মোট ১৬৮ কার্গো অর্থাৎ ১০ বছরে ২০৪ কার্গো এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।