সেহেরিতে মাংসের স্বাদ নিতে পারবে কী মধ্য ও নিম্নবিত্তরা?

নিত্যপণ্যের
  © ফাইল ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রতিবছর রমজান উপলক্ষ্যে পণ্য ছাড়ের প্রতিযোগিতা চলে। অন্যদিকে বাংলাদেশে প্রতিবছর রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা অঘোষিত নিয়ম। এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। কয়েকদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ৩০ টাকা। প্রায় বছরজুড়েই নিত্যপণ্যের অতি মূল্যে হাঁসফাঁস ভোক্তাদের। আর কয়েক দিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। তবে এবার রমজান ভোক্তাদের জন্য বেশ খরচের হতে চলেছে। রমজান সামনে রেখে বাজার যেন আরও বেশি তেতে আছে। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের দাম।

এবার সেহেরিতে মাংসের স্বাদ নিতে পারবে না অনেক মধ্য ও নিম্নবিত্ত। গেল কয়েক দিনে বয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বয়লার মুরগির দাম; প্রতি কেজির জন্য ২২০-২৪০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৯০০ টাকায়।

কাওরান বাজারের মুরগি বিক্রেতা দুলাল বলেন, পনের দিন আগেও সোনালি মুররির কেজি ছিল ২৭০ টাকা, এখন তা ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চড়া গরুর মাংসের দামও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

দাম বাড়ার বিষয়ে এক গরুর মাংস বিক্রেতা বলেন, আমাদের ৭১৫ টাকা কেজি দরে কেনা পড়েছে। তাহলে কত দরে বিক্রি করবো আপনারই বলুন?

এদিকে রমজান মাস শুরুর আগেই অস্থির হয়ে উঠা রোজার পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে দাম না বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮৫-৯০ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে বেসন ১৪০-১৬০ টাকা খোলা আটা ৫০-৫৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫-৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫-৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও!

তবে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন দামের ভোজ্যতেল। বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত দামে বিক্রি হলেও বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলে। রাজধানীর হাতিরপুল বাজারের এক মুদি দোকানি জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৩ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
 
রোজার আগে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজারও। জিরা বাদে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। প্রতি কেজি জিরা ৭৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৬০-৪৭০ টাকা, গোলমরিচ ৯০০ টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়।
 
তবে বাজারে কিছুটা দাম কমেছে পেঁয়াজের। প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। দেশি নতুন রসুন কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। আর আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়। এ ছাড়া মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।