'বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল', অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি বিশ্বভারতীর

বিশ্বভারতী
  © সংগৃহীত

ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল’ করে বাসভবন নির্মাণের অভিযোগ করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। জমি ফেরত না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে হুমকি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে বিশ্বভারতী একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ মেটাতে আলোচনা না আসেন, অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

ভারতীয় এ নোবেল জয়ীর বাসভবনের নাম ‘প্রতীচী’। বলা হচ্ছে, তিনি বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস এলাকার জমি দখল করে সেটি নির্মাণ করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ভারতীয় বাঙালি এ অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অবৈধভাবে দখল করেছেন।

তবে সেন বারবার জোর দিয়েছিলেন যে শান্তিনিকেতনে তার যে জমি রয়েছে তার বেশিরভাগই তার বাবা বাজার থেকে কিনেছিলেন এবং আরও কিছু প্লট ইজারা নিয়েছিলেন।

১৯৪৩ সালে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এক একরের কিছু বেশি জমি ইজারা নিয়েছিলেন অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেন। পরে সেই জমিতে নিজের বাসভবন নির্মাণ করেন অমর্ত্য। বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তাদের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ আশুতোষ সেনকে ১ দশমিক ২৫ একর জমি ইজারা দিয়েছিল। কিন্তু অমর্ত্য সেন প্রতীচী নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কিছু জমি হাতিয়েছেন। বর্তমানে তার বাসভবনসংলগ্ন জমির পরিমাণ ১ দশমিক ৩৮ একর। অর্থাৎ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দশমিক ১৩ একর জমি বাড়তি দখল করেছেন।

বিশ্বভারতীর বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আশুতোষ সেন তাদের কাছ থেকে যে জমি ইজারা নিয়েছিলেন, সেটির স্বাক্ষরিত নিবন্ধিত দলিল ও ২০০৬ সালে কর্ম সমিতির সিদ্ধান্ত থেকে প্রতীয়মান বিশ্ববিদ্যালয় বাবা-ছেলেকে ১ দশমিক ৩৮ একর জমি তো দেয়নি, এমনকি বিশ্বভারতীর কোনো জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়নি।

অমর্ত্য সেনকে নিজের আত্মগরিমা ও বিশ্বভারতীর সুনাম রক্ষায় সবকিছু করতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। আলোচনায় না বসলে কর্তৃপক্ষের মামলা ছাড়া কোনো পথ নেই, তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করা হয়েছে নোবেল জয়ী অধ্যাপককে।

অমর্ত্য ও বিশ্বভারতীর মধ্যে চলমান সমস্যার মধ্যে গত শনিবার একটি সরকারি নথি প্রকাশ পায়, যাতে শান্তিনিকেতনের ১ দশমিক ৩৮ একর জমি প্রয়াত আশুতোষ সেনকে দীর্ঘমেয়াদে লিজ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া বীরভূমের জেলা প্রশাসক বিধান রায়ও এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর দাবি করছে, অমর্ত্যের বাবাকে ১ দশমিক ২৫ একর জমিই যে লিজ দেওয়া হয়েছিল সেটির কোনো রেকর্ড নেই।

উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী গত ২৪ এবং ২৭ জানুয়ারী অর্থনীতিবিদকে দুটি চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যে জমিটি তিনি "অননুমোদিতভাবে ধরে রেখেছেন" তা ফেরত দিতে।

অমর্ত্য সেন কেন্দ্রীয় সরকারের অনেক নীতির সমালোচনা করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব কাজ করে থাকতে পারে বলে কিছু মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র: আউটলুক ইন্ডিয়া


মন্তব্য