প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করবে জার্মানি

জার্মান যুদ্ধজাহাজ
  © ডিফেন্স নিউজ

আগামী বছর ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করবে জার্মানি। জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস গতকাল রবিবার (৪ জুন) একথা জানিয়েছেন।

চীন ও তাইওয়ান ইস্যুতে আঞ্চলিক উত্তেজনা যখন প্রচণ্ড এবং দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের সঙ্গে যখন আমেরিকার বড় রকমের গোলযোগ চলছে তখন জার্মানি এই ঘোষণা দিল।

গতকাল সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শাংরিলা ডায়লগ নিরাপত্তা সম্মেলনে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, সমুদ্রের যে পথে ইউরোপের চল্লিশ শতাংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হয় তার প্রতি অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। এইজন্য জার্মানি সরকার ২০২১ সালে ভারত- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি ফ্রিগেট পাঠিয়েছে এবং ২০২৪ সালে আরও যুদ্ধজাহাজ পাঠাবে।

সিঙ্গাপুর নিরাপত্তা সম্মেলনে বিশ্বের বহু দেশের প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা অংশ নেন। তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের তর্জনগর্জনও আন্তর্জাতিক স্তরে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷ সম্মেলনে চীনা ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাক্ষাৎ হলেও চীন সরাসরি আলোচনা চালাতে অস্বীকার করছে৷

এমন পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ চীনের অনেক প্রতিবেশী দেশ পারস্পরিক সহযোগিতার বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সোমবার নতুন দিল্লিতে ভারতের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও নিবিড় করার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ দুই দেশই এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আগামী ২২শে জুন ওয়াশিংটনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাষ্ট্রীয় সফরের সময় আরো কিছু ঘোষণার সম্ভাবনা বাড়ছে৷

জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস সিঙ্গাপুরের সম্মেলনে দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ ২০২৪ সালে সেখানে দুটি রণতরী পাঠানোর ঘোষণা করেন তিনি৷ তবে তাঁর মতে, এর মাধ্যমে চীন বা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না৷ পিস্টোরিউস বলেন, নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক কাঠামোর পক্ষে সব দেশের জোরালো সমর্থন আরও জরুরি হয়ে উঠেছে৷ তাছাড়া বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথগুলির সুরক্ষাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন৷ উল্লেখ্য, ২০২১ সালে জার্মানির একটি যুদ্ধজাহাজ দক্ষিণ চীন সাগরে টহল দিয়েছিল৷ ইউরোপের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশ সেই অঞ্চল দিয়ে যাতায়াত করে বলে জার্মানিসহ একাধিক দেশের কাছে সেখানকার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিশেষ গুরুত্ব রাখে৷

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ প্রসঙ্গে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধেরও উল্লেখ করেন৷ তার মতে, এই যুদ্ধে রাশিয়ার জয় হলে বিশ্বের যে কোনো শক্তি অন্য দেশের উপর হামলা ও কোনো উসকানি ছাড়াই সামরিক শক্তি প্রয়োগে উৎসাহ পেতে পারে৷ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও এমন যুদ্ধের আশঙ্কা সম্পর্কে পিস্টোরিউস সতর্ক করে দেন৷

জার্মানি এবং চীনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে আগামী বছর যদি দক্ষিণ চীন সাগরে জার্মানি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে তাহলে তা চীনের জন্য মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে, পার্স টুডে


মন্তব্য