গাজায় স্থল হামলার প্রস্তুতি, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা: নেতানিয়াহু

গাজা
গাজায় ইসরায়েলের স্থল হামলার প্রস্তুতি (ইনসেটে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু)  © সংগৃৃহীত

গাজায় স্থলপথে হামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ)। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেলেই আক্রমণ চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে হামলার সময়সহ বিস্তারিত তথ্য দেননি তিনি।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

এদিকে গতকাল বুধবার রাতভর গাজা উপত্যকার উত্তরে ট্যাংক ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুতে অভিযান চালিয়েছে আইডিএফ। ‘যুদ্ধের পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হওয়া এবং গাজায় অসংখ্য সন্ত্রাসী সেল, অবকাঠামো এবং ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে’ আঘাত হানার প্রস্তুতি হিসেবে এই অভিযান।

এর আগে টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় স্থল অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আইডিএফ। তবে কখন এই অভিযান পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা হবে না। মন্ত্রিসভার সভায় স্থল হামলার সিদ্ধান্ত অনুমোদন হবে।

আরও পড়ুন:- ইসরায়েলি বিমান হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিকের স্ত্রী ও দুই সন্তান নিহত

আজ বৃহস্পতিবার অভিযানের একটি ভিডিও পোস্ট করে খবরটি নিশ্চিত করেছে আইডিএফ। তারা জানিয়েছে, গাজায় অনেকগুলো সন্ত্রাসী সেল, অবকাঠামো এবং ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘাঁটিতে আঘাত হানার পর সেনারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ফিরে গেছে।

জিউয়িশ নিউজ সিন্ডিকেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গিভাতি ব্রিগেডের অধীনে আইডিএফ সৈন্যরা হামাসের বেশকিছু অবকাঠামো এবং ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। গত ৭ অক্টোবর আইডিএফের অপারেশন সোর্ডস অফ আয়রন শুরু হওয়ার পর থেকে দুই সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত চালানো হামলার তুলনায় এই অভিযানের তীব্রতা ছিল আরও ব্যাপক। তবে বুধবার রাতের হামলার মাধ্যমে আইডিএফের স্থল অভিযান শুরু হয়নি বলেও জানানো হয় এই প্রতিবেদনে।

এর আগে টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গাজায় স্থল অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আইডিএফ। তবে কখন এই অভিযান পরিচালনা করা হবে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাননি তিনি।

আরও পড়ুন:- প্রতিশোধ নিতে জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের ভিসা দেবে না ইসরায়েল

নেতানিয়াহু সেই ভাষণে বলেন, ‘বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছি এবং এটি কেবল শুরু। মাটির উপরে কিংবা নিচে, গাজার ভেতরে কিংবা বাইরে হোক-হামাসের সব যোদ্ধাকেই মরতে হবে।’

ইসরায়েল গত সপ্তাহে গাজা এবং এর উত্তরাঞ্চলের ১১ লাখ বাসিন্দাকে নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এসব এলাকা ত্যাগ করতে বলেছিল। তবে জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, গাজার উত্তরে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা কিছু ফিলিস্তিনি দক্ষিণের পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে আসতে শুরু করেছে।

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ ২০তম দিনে গড়িয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হতাহতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা সাড়ে ৬ হাজার ৫৪৬ জনে এসে পৌঁছেছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার। নিহতদের মধ্যে ২১০০ এর অধিক শিশু রয়েছে। নারী প্রায় দুই হাজার জন।