গুজরাটে হোস্টেলে নামাজ পড়ায় ছাত্রদের ওপর হামলা; কয়েকজন হাসপাতালে
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৯ PM , আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৯ PM

বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারতে বেড়েছে ধর্মীয় সহিংসতা। গত শুক্রবার রাস্তায় নামাজ পড়ার কারণে এক পুলিশ সদস্য নামাজরত মুসল্লিদের লাথি মেরে সরিয়ে দেয়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এবার গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে তারাবিহর নামাজ আদায়ের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, আফগানিস্তান ও উজবেকিস্তানের নাগরিকদের ওপর তারাবির নামাজের সময় হামলা চালানো হয়। এ সময় পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্শ সাংহাবি এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের ক্যাম্পাসে মসজিদ নেই। এজন্য তারা হোস্টেলে তারাবি নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকর্মীরা ঠেকাতে চাইলেও তারা ব্যর্থ হন।
আফগানিস্তান থেকে আসা এক শিক্ষার্থী জানান, ১৫ মুসলিম স্টুডেন্ট হোস্টেলের এ ব্লকে নামাজ পড়ে। এরপর ৩ লোক এসে জিজ্ঞাসা করে এখানে নামাজ পড়ার অনুমতি কে দিয়েছে? এরপর আফগান শিক্ষার্থী বলে নামাজ পরলে সমস্যা কী? এক পর্যায়ে ওই তিন ব্যক্তি ২০০ জনের মতো লোক জড়ো করে তাদের ওপর হামলা। চালায়। হামলাকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং নামাজ পড়ার অনুমতি কে দিয়েছে–তা জানতে চান।
হামলাকারীদের হাতে ছুরি, পাথর ইত্যাদিসহ আরও ধারালো অস্ত্র ছিলো।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, তারা আমাদের ল্যাপটপ, ফোন ও মোটরসাইকেলে ভাঙচুর চালিয়েছে। হামলার আধা ঘণ্টা পর পুলিশ আসে, কিন্তু ততক্ষণে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ভাঙা মোটরসাইকেল ও ল্যাপটপ দেখা গেছে।
এ ঘটনায় ৫-৬ জন স্টুডেন্টকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২ আফ্রিকা থেকে, ১ জন বাংলাদেশী, ১ জন শ্রীলঙ্কান, ১ উজবেকিস্তান আরেক আফগানিস্তানের স্টুডেন্ট ছিলো বলে জানা গেছে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলো, কিন্তু তারা হামলাকারীদের বিরত রাখার চেষ্টা করেনি বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সেখানকার মুসলিমরা আতঙ্কিত অবস্থায় আছে। তারা নিরাপত্তার দাবি তুলেছে।
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য এবং অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করবেন কি না–সেটিও তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানতে চেয়েছেন।