যে কারণে সমুদ্রে ঘাস রোপণ করছে জাপান

জাপান
  © সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে সারা বিশ্বেই। অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে বৈষ্ণিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দ্বীপ ও সমুদ্র তীরবর্তী রাষ্ট্রগুলোতে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এবার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিতে দেখা গেলো দ্বীপরাষ্ট্র জাপানে।

গত শনিবার জাপানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরশহর ইয়োকোহামার সাগরতীরে জড়ো হয়েছিলেন ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবী। তাদের আসার উদ্দেশ্য ছিল একটিই— সাগরের অগভীর পানিতে সামুদ্রিক ঘাস রোপণ করা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া ডেকান হেরার্ল্ডের প্রতিবেদনেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।

চতুর্দিকে সমুদ্রপরিবেষ্টিত জাপান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থান রক্ষা করতে দেশজুড়ে সাগরের অগভীর পানিতে সামুদ্রিক ঘাস রোপণের প্রকল্প নিয়েছে। সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ইয়োকোহামায় এসেছিলেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা।

বিশ্বের যেসব দেশ বাতাসে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইডসহ অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ করে, জাপান সেসবের মধ্যে অন্যতম। এ তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে দেশটি।

জাপানের আয়তন খুব বেশি নয়— ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯৭৫ কিলোমিটার মাত্র। ভৌগলিক আয়তনের হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের চেয়েও ছোটো জাপান। কিন্তু বিশ্বের কয়েকটি দীর্ঘতম কিছু সামুদ্রিক উপকূল রয়েছে দেশটিতে। সামুদ্রিক ঘাসের আবাদের জন্য এসব উপকূলকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাসোসিয়েশন ফর শোর এনভায়ার্নমেন্ট ক্রিয়েশন’ নামের এই প্রকল্পের কর্মকর্তা ও সমুদ্রবিজ্ঞানী কেইতা ফুরুকাওয়া বলেছেন, ‘বাতাস থেকে কার্বন ও গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমাতে এই ঘাস বেশ কার্যকর। তাই স্থলভাগে বৃক্ষ রোপণের পাশপাশি এই প্রকল্প নিয়েছে সরকার।’  

জাপানের সমুদ্র বিজ্ঞানীদের এই দাবি যে সঠিক তার সাক্ষ্য মিলেছে দেশটির পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের তথ্যেও। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জাপান উপকূলের অগভীর অংশের এসব ঘাসের বাগান পানি ও বাতাস থেকে শুষে নিয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টন কার্বন।

বর্তমানে প্রতি বছর ১১৩ কোটি ৫০ লাখ টন গ্রিনহাউস গ্যাস বতাসে নির্গমণ করে জাপান। তবে দেশটির সরকার আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে ‘শূন্য কার্বন নিঃস্বরণকারী দেশ’ হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। এ কারণেই স্থলভাগের পাশাপাশি সাগরে বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মনযোগী হয়েছে জাপানের সরকার এবং জনগণ।

সূত্র : রয়টার্স


মন্তব্য