অবশেষে সাইফার মামলায় খালাস পেলেন ইমরান খান
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ০৭:৩৮ PM , আপডেট: ০৩ জুন ২০২৪, ০৭:৩৮ PM

রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের মামলায় খালাস পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মেহমুদ কুরেশি।
সোমবার (০৩ জুন) রাজধানী ইসলামাবাদের হাইকোর্ট (আইএইচসি) এক রায়ে আলোচিত এই মামলা থেকে দু’জনকে রেহাই দিয়েছেন। খবর ডন ও জিও নিউজের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) দুই নেতাকে এই মামলা থেকে খালাস দেন। দেশটির প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক ও বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। সাইফার মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিলের সংক্ষিপ্ত রায়ে সাজা বাতিল করে তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্সে পিটিআই এর আইনী দলের একজন মুখপাত্র লিখেছেন, সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, সাজার রায় বদলে গেছে।
প্রসঙ্গত, ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ মার্চ, তার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানের প্রায় ২ সপ্তাহ আগে। ওই দিন একটি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় একটি চিঠি দেখিয়ে ইমরান খান বলেছিলেন, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা বাইরের দেশের সরকারের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতেছেন এবং এই চিঠিতে তার প্রমাণ রয়েছে।
ইমরানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ মার্চ, তার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানের প্রায় ২ সপ্তাহ আগে। ওই দিন একটি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় একটি চিঠি দেখিয়ে ইমরান খান বলেছিলেন, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা বাইরের দেশের সরকারের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতেছেন এবং এই চিঠিতে তার প্রমাণ রয়েছে।
জনসভায় চিঠিটি পড়েননি ইমরান, কিংবা চিঠিতে কী রয়েছে— সে সম্পর্কিত কোনো ইঙ্গিতও দেননি। শুধু পকেট থেকে চিঠিটি বের করে জনসাধারণের সামনে উঁচু করে ধরেন।
কিন্তু এপ্রিলের ১০ তারিখ বিরোধী এমপিদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েকদিন পর এক জনসভায় ইমরান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের প্রধান ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে সেই দেশের পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের একটি বৈঠক হয়েছিল এবং সেই বৈঠকে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।
ইমরানের ভাষ্যমতে, লু বলেছিলেন— ইমরান খানকে যদি ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তাহলে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) চেয়ারম্যান নওয়াজ শরিফসহ দলের অন্যান্য জেষ্ঠ্য নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব দুর্নীতির অপরাধ আদালতে বিচারধীন রয়েছে, সেগুলো মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করায় ব্যাপারটি সেখানেই থেমে গিয়েছিল।
ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন পিএমএলএনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং নওয়াজ শরিফের ছোটভাই শেহবাজ শরিফ। তিনিও দীর্ঘ সময় ব্যাপারটিতে গুরুত্ব দেননি।
কিন্তু ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয় চলতি বছর সেপ্টেম্বরে, ইমরান খান, পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মুহম্মদ কুরেশি এবং সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ ওমরের দু’টি অডিও টেপ ফাঁসের পর। সেই অডিও টেপে এই তিনজনকে এই মর্মে আলোচনা করতে শোনা যায় যে, ওই চিঠিটি থেকে পিটিআই কীভাবে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারে।
তারপর ৩০ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা বিষয়টি তদন্তে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে (এফআইএ) নির্দেশ দেয়। গত অক্টোবরে ইমরান ও কুরেশিকে অপরাধী সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয় এফআইএ।
সেই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওই মাসেই এফআইএকে বিশেষ আদালতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা।
মামলা দায়েরের তিন মাস পর ৩০ জানুয়ারি ইমরান ও কুরেশিকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছর কারাবাসের সাজা দেন নিম্ন আদালত, যা আজ মওকুফ হলো।
ইমরান এবং কুরেশি উভয়ই বর্তমানে কারাগারে আছেন এবং এই রায়ের ফলে তাদের কারাগার থেকে বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে তারা সাজা খাটছেন ৯ মে দাঙ্গায় উসকানি প্রদান মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে।