আখেরি মোনাজাত: কল্যাণ-ঐক্য-সম্প্রীতি কামনা, সড়কে মানুষের স্রোত 

ইজতেমা
  © সংগৃহীত

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইহকালের শান্তি, পরকালের মাগফেরাত এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে শেষ হয়েছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত। এতে অংশ নিয়েছেন লাখো মুসল্লি। হাট-ঘাট মাঠ যে যেখানে রয়েছেন সেখানই এই মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন মানুষ।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা ফিরতে শুরু করেছেন। এতে সড়ক, ট্রেন এবং নৌপথে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে কয়েকদিন আগে থেকেই মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন ইজতেমা মাঠে।

ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশে বিশেষভাবে স্থাপিত মোনাজাত মঞ্চ থেকে এ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ এ তাৎপর্যপূর্ণ মোনাজাতে প্রায় ৪০ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে ইজতেমার আয়োজকরা ধারণা করছেন।

আরও ‍পড়ুন: গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটে ব্যাহত হচ্ছে রড উৎপাদন

এর আগে সকালে অনুষ্ঠিত হয় হেদায়েতী বয়ান। পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক হেদায়েতী বয়ান করেন। পরে ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা নসিহতমূলক কথা বলবেন। ইজতেমার প্রথম পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোর থেকেই মুসল্লিদের ঢল ছুটেছে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে। আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে জানান, আখেরি মোনাজাতের পর মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় সাত হাজার পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সাদা পোশাকে মুসল্লিদের বেশে খিত্তায় খিত্তায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মুসল্লিরা যাতে খুব দ্রুত এবং নিরাপদে ময়দান ত্যাগ করতে পারেন সেজন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে।

এবারের ইজতেমায় অন্যতম আকর্ষণ ছিল ৭২ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাদ আসর যৌতুকবিহীন এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।

লাখো মানুষের ইবাদত বন্দেগির মধ্যে বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ ছিল যৌতুকবিহীন এই বিয়ে। সম্পূর্ণ ইসলামি শরিয়া মোতাবেক তাবলিগের রেওয়াজ অনুযায়ী ইজতেমার বয়ান মঞ্চের পাশেই বসে যৌতুকবিহীন বিয়ের আসর।

বর-কনের সম্মতিতে উভয় পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। সকাল থেকেই অভিভাবকরা হবু দম্পতিদের নাম তালিকাভুক্ত করান। বিয়ের পর বয়ান মঞ্চ থেকে মোনাজাত করে নবদম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করা হয়। এ সময় মঞ্চের আশপাশের মুসল্লিদের মাঝে খোরমা-খেজুর বিতরণ করা হয়।

ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, বাদ আসর এই বিয়ে পড়ান ভারতের মাওলানা জোবায়রুল হাসান। বিয়েতে ‘মোহর ফাতেমী’র নিয়মানুযায়ী মোহরানা ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী মোহরানা ধরা হয় দেড় শ’ তোলা রুপা বা এর সমমূল্যের অর্থ।

বর বরিশালের ব্যবসায়ী ফাইজুল হক বলেন, তাবলিগ জামাতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত। খুব ইচ্ছে ছিল বিশ্ব ইজতেমায় এসে বিয়ে করার। আজ সেই আশা পূরণ হয়েছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ