যে ফটক বহন করে একাত্তরের ইতিহাস 

সাভার
সাভারের স্মৃতিসৌধের কোলঘেষে গড়ে উঠা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের(গবি) মূল ফটক  © মোমেন্টস ফটো

দীর্ঘ নয় মাস যাবত বাংলাদেশকে পাকিস্তানীদের কালো হাত থেকে মুক্তির জন্য যুদ্ধ করতে হয়। কতো শত ইতিহাস, কতো গল্প আর লাখো মানুষের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আমরা আজ স্বাধীন। মুক্তিযুদ্ধের এমনই ইতিহাস ধারণ করে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে দাড়িয়ে আছে সাভারের স্মৃতিসৌধের কোলঘেষে গড়ে উঠা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের(গবি) মূল ফটক।

গণ বিশ্ববিদ্যালয় একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে সবসময়ই মুক্তমনা চিন্তার চর্চা হয়। তারই ধারাবাহিকতা আমরা দেখতে পাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে। যেখানে ফুটে উঠেছে ১৯৭১ এর প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। তাছাড়া ভিতরের ফটকে দেখতে পাই বাংলার ইতিহাসের মহীয়সী সব নারীদের। 

ক্যাম্পাসে ঢোকার পূর্ব মুহূর্তেই চোখ আটকে যায় গবির মূল ফটকে। মনে পড়ে যায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। যেখানে পোড়ামাটির ফলকে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রাম, পাক-হানাদার বাহিনীর নিরীহ বাঙ্গালীদের উপরে পৌশাচিক নির্যাতনে দৃশ্য। ছবিগুলো মনের কোন এক কোনে বারবার দাগ কেটে যায়। তবে ফটকটির মাঝ বরাবর রয়েছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মিত্রবাহিনীর কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণের দৃশ্য। 

তাছাড়াও বাংলার ইতিহাসের মহীয়সী সব নারীদের ছবিও দেখতে পাওয়া যায়। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, কামিনী রায়, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ইলা মিত্র, জাহানারা ইমামদের ছবি দেখে অনুপ্রেরণা পায় ক্যাম্পাসের মেয়েরা। 

এছাড়াও গণ বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় ব্যতিক্রমী চিন্তার জানান দিয়ে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো  বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী। তৃতীয়লিঙ্গের মানুষেরা সবসময়ই সমাজে অবহেলিত হয়ে থাকে। তবে গণ বিশ্ববিদ্যালয় এর ব্যতিক্রম। এখানে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করে তৃতীয় লিঙ্গের লোকেরা। এমনকি বাংলাদেশের প্রথম নারী গাড়ি চালকও গণ বিশ্ববিদ্যালয়েই দেখা যায়।


মন্তব্য