প্রশাসনিকভাবে ঢাবির হল ক্যান্টিন পরিচালনার দাবিতে মানববন্ধন

ঢাবি
  © মোমেন্টস ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর ক্যান্টিনের খাবারের মান বৃদ্ধি ও দাম কমাতে প্রশাসন কর্তৃক কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

আজ বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুর বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন শেষে এ স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুর রনির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব হাসান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান, নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমুন নাহার কর্ষী, বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমানুল হক।

মানববন্ধনে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, ঢাবির মোট বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ খরচ হয় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতেই৷ যেহেতু হল প্রশাসন, হাউজ টিউটর রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সার্বিক দেখভালের জন্য কিন্তু  তারা তো কোন কাজ করছে না। সব কাজ করছে ছাত্রলীগের নেতারা।  

তিনি আরও বলেন, হল প্রাধ্যাক্ষের ভূমিকা কোথায়? যেখানে তাদের কোন হস্তক্ষেপও নেই। তাহলে একটা কাজ করা উচিত, হলের প্রাধ্যক্ষ বা হাউস টিউটরদের বাদ দিয়ে তাদের ভাতা অফ করে দিয়ে এই টাকা শিক্ষার্থীদের খাবারে ভর্তুকি দেয়া হোক।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আহমেদ জিফ বলেন, রোজার আগের যেই খাবারের দাম ছিলো ৩০-৪০ টাকা যা বর্তমানে ৭০-৮০ টাকা করা হয়েছে, আমাদের জন্য যেটা সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে। তারা বলছে সবকিছুর দাম বেড়েছে। তাহলে দাম যদি বেড়েই থাকে, রাতের খাবার ৫০ টাকায় দিতে পারলে সাহরিতে কেন সেটা ৮০ টাকা হবে? প্রশাসন কেন তাদের ভর্তুকি দিচ্ছে না, এটা প্রশাসনের দায়ভার নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা ভালো মানের খাবার খেতে পারে, তারা দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে এসেছে পড়াশোনার জন্য, খাবারের দাম ও মান নিয়ে আন্দোলন করার জন্য নয়। এসব দেখভাল করা হল প্রশাসনের কাজ। একটা চিন্মবিত্ত পরিবারের মানুষ যতটা ক্যালরির খাবার পায়, সে পরিমাণ খাবারও পায় না ঢাবির হলের শিক্ষার্থীরা।

শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের  সাকিব হোসেন বলেন, কেবল রমজানকে পুঁজি করে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে যা একেবারেই অমানবিক। প্রশাসন সবকিছু জেনে বুঝে চুপ থাকছে। প্রশাসন কেন আছে? তাদের কাজই হলো শিক্ষার্থীদের ভালো মন্দ বিবেচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কিন্তু তারা এ কাজ করছে না। 

স্মারকলিপি প্রদান শেষ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুর রনি বলেন, ‘আমরা ৩ দফা দাবিতে সমাবেশ শেষে স্মারকলিপি দিতে মাননীয় উপাচার্যের কার্যালয়ে যাই। তাঁর কাছে আমরা হলে খাবারের দাম কমানো, খাবারের মানবৃদ্ধির দাবি জানালে তিনি আমাদের জানান খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি কমদামে একটি প্যাকেজ চালু করবেন যাতে কোন আমিষ থাকবে না।'

তিনি আরও বলেন, ‘খাবারের পুষ্টিগুণ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, খাবারের পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করতে হলে টাকা খরচ করতে হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তার এ ধরণের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রদের স্বার্থের পক্ষের সংগঠনগুলোকে খাবারের দাম কমানো, খাবারের মানবৃদ্ধির দাবিতে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবার আহ্বান জানাই।’