সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর আগমনে রাবিপ্রবিতে মতবিনিময় সভা

রাবিপ্রবি
  © সংগৃৃহীত

গতকাল বুধবার (৩ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) সংক্ষিপ্ত সফর করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান। এসময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এবং রাঙ্গামাটির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ জরতী তঞ্চঙ্গ্যা তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

রাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক  ড. সেলিনা আখতার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা, রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড.নিখিল চাকমা সহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী এবং অতিথিবৃন্দকে সাদরে বরণ করে নেন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুষ্প স্তবক অর্পণ করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার। 

এরপর প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীপংকর তালুকদার একাডেমিক ভবনে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। 

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। বক্তব্যে তিনি বলেন, "রাঙ্গামাটি আমার একটি খুব প্রিয় জায়গা। এখানকার (রাঙ্গামাটির) মানুষের সরলতায় আমার মন ছুঁয়ে যায় সবসময়। আমার রাঙ্গামাটি সফর সম্পর্কে জানার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেমন আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে  অবহিত করতে। আপনারা যেভাবে ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গায় আর দেয়ালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্তি আর ছবি রেখেছেন। এটাই হলো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ। আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো,বঙ্গবন্ধুর উক্তি এবং তাঁর আদর্শগুলোকে পালন করার চেষ্টা করবেন। আপনাদের রাঙ্গামাটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যাবো।"

তিনি আরো বলেন, "আমি ও আমার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সবসময় আপনাদের পাশে থাকবো। আমরা এখানকার সংস্কৃতিকে কিভাবে উন্নত করার চেষ্টা করবো। সমাজে যেসকল সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। তাহলে আমরা পারবো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন। আপনারা স্মার্ট বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের নাম উঁচুতে নিয়ে যাবেন।"

তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার সংস্কৃতিকে দেশের মানুষের মাঝে বিনিময় করার আহ্বান জানিয়েছেন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি সংসদীয় আসনের এমপি দীপংকর তালুকদার। বক্তব্যের শুরুতে তিনি যারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন তৎকালীন উপাচার্য, শিক্ষক,কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীবৃন্দদের স্মরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদিচ্ছা ও উদ্যোগে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আজকের এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। রাঙ্গামাটির বৈসাবি মেলাতে আসার আমন্ত্রণে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথায় আজকে সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আমাদের রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে এসেছেন।"

সভায় সভাপতির বক্তব্যে রাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ডের অগ্রগতি এবং রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানের অগ্রগতির বিষয় তুলে ধরেন। তিনি চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান শেষ হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়াও পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি হল, একটি একাডেমি বিল্ডিং সহ সর্বমোট চারটি বিল্ডিং আঠারো মাসের মধ্যে শেষ করার কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে বর্তমানে দুইটি প্রশাসনিক ভবন,দুইটি একাডেমি ভবন এবং একটি লাইব্রেরি ভবন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ জরতী তঞ্চঙ্গ্যা এবং রাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রাবিপ্রবির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডীন  ও সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ধীমান শর্মা। 

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

মত বিনিময় সভা শেষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।


মন্তব্য