বেনাপোলে ভারত ফেরা যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড়,ভারতীয় ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি

ঈদ
  © ফাইল ছবি

ঈদের ছুটি শেষে বেনাপোলে ভারত ফেরা যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড়,পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বলছেন,ভারতীয় ইমিগ্রেশনে যত ভোগান্তির শিকার বাংলাদেশী যাত্রীরা। 

ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে ভারতে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে ছুটি শেষে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা । এজন্য বেনাপোল বন্দরে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে তারা গিয়েছিলেন ভারতে।

এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এতে বুধবার থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন বন্ধ ছিল দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছিল। এতে লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সাক্ষাত করতে অনেকে গিয়েছিলেন ভারত। আবার অনেকে ভারত থেকে ঘুরতে আসছেন বাংলাদেশে। এজন্য স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ছুটির দিনে বেনাপোল বন্দরে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে অনেক গুন বেশী । তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছে বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরের নিরাপত্তাকর্মীরা।

খুলনার এক পাসপোর্টধারী যাত্রী বলেন ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন। বেনাপোল-পেট্রোপোল নো-ম্যানসল্যান্ডে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ডেস্ক অফিসার কম থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

ঢাকার এক পাসপোর্টধারী যাত্রী বলেন, এবার টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে বেড়ানোর জন্য পরিবার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম ভারতে ঘুরতে। ছুটি শেষ হওয়ায় দেশে ফিরতে হয়েছে। তবে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ফিরে আসার সময় বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে। ডেস্কের পরিমাণ বেশি থাকলে ও অফিসার বসেন মাত্র ৩/৪ জন। কাজও করেন খুব ধীরগতিতে। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের বেশীরভাগ অভিয়োগ বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন দ্রুত শেষ হলেও ভারতের ইমিগ্রেশনে যত ভোগান্তি। এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যাত্রীরা উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে ভারতফেরত যাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, দূরপাল্লার বাসে আসন-সংকটের কথা বলে বেশি ভাড়া আদায় করছে পরিবহন কাউন্টারগুলো। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহনভেদে জনপ্রতি ননএসি ৫৫০-৭৫০ টাকা ও এসি ১০০০-১২০০ টাকা হলেও এখন চাইছে ননএসি ৮০০ টাকা ও এসি ১৫০০-২০০০ টাকা। ফেরার পথে পকেটে টাকা কম থাকায় কিছুটা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেন। ভ্রমণকর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ১৪০ কোটি টাকা আদায় হয়। সে হিসেবে সেবার মান বাড়েনি।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম জানান, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় ভারতফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তবে দ্রুত যাতে তারা বন্দরে পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে পারেন সেজন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফি আহমেদ জানান, ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পাঁচ দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩২ হাজার ২৮৩ জন যাত্রী যাতায়াত করেছেন। যা অন্য সময়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজারের মধ্যে থাকে। এবার রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ১৩ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার যাত্রী দেশে ফিরেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় তারা ভ্রমণে ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। যাত্রীদের নির্বিঘ্নে দ্রুত পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে ডেস্ক অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ